চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: নন্দীগ্রামের (Nandigram) শহিদ তর্পণ ঘিরে ফের অশান্তির আঁচ। বৃহস্পতিবার দিনভর শহিদ দিবস (Shahid Diwas) পালন নিয়ে তৃণমূল-বিজেপির (TMC-BJP) চাপানউতোরের পর রাতের অন্ধকারে শহিদ মঞ্চের একাংশ পুড়ে গেল। শুক্রবার সকালে বিষয়টি নজরে আসে স্থানীয় বাসিন্দাদের। দেখা যায়, গোকুলনগরে তৃণমূলের তরফে যে শহিদ উদযাপন মঞ্চ তৈরি হয়েছিল, তার একটি অংশ পুড়ে গিয়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, আগুন (Fire) লাগানো হয়েছে। এই ঘটনায় সরাসরি অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। গেরুয়া শিবির অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ঘটনা ঘিরে এলাকায় এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামের একই জায়গায় একাধিক কর্মসূচির পরিকল্পনা তৃণমূল ও বিজেপির। এদিন সকালে গোকুলনগরে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির ব্যানারে সভা ছিল তৃণমূলের। তাতে নেতৃত্ব দেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। প্রথমে শহিদ বেদিতে মাল্যদান করেন কুণালবাবু ও তৃণমূলের অন্যান্য নেতারা। সেখানে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হলেও কুণাল ঘোষ নিজে সকলের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি সামাল দেন।
[আরও পড়ুন: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি: জামাই কল্যাণময়ের মাধ্যমে দুর্নীতির ৫০ কোটি টাকা পাচার পার্থর, দাবি ইডির]
কিন্তু একই মঞ্চে বিজেপির তরফে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) মাল্যদানের কর্মসূচি ঘিরে পরিস্থিতি ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সভা শুরুর আগেই শুভেন্দু অধিকারীর উদ্দেশে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দিতে শুরু করেন স্থানীয়রা। শহিদ বেদির সামনে ধরনাতেও বসে পড়েন তাঁরা। তাঁদের হাতে ছিল পোস্টার। এ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই মাল্যদান করতে দেওয়া হবে। তবে শহিদ বেদিতে দেওয়া তৃণমূলের মালা সরালে চলবে না। তার উপরেই মাল্যদান করতে হবে বিজেপিকে।” তৃণমূলের অর্পণ করা মালা সরালে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
[আরও পড়ুন: খুড়তুতো ভাইকে বিয়ে করতে মরিয়া, পরিবার রাজি না হওয়ায় ট্রেনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা তরুণীর]
এসবের পর রাতের অন্ধকারে কেউ বা কারা শহিদ মঞ্চে আগুন লাগিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী গোপাল গায়েনকে মারধরও করা হয়েছে গভীর রাতে। শুক্রবার সকালে দেখা যায়, মঞ্চের একটি অংশ পুড়ে গিয়েছে। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, সারদিন নন্দীগ্রাম শহিদ দিবস নিয়ে রাজনীতির চেষ্টা করেছিল বিজেপি। তাতে কোনও দাগ কাটতে না পেরে রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের তৈরি মঞ্চ পোড়ানো হয়েছে। সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে তেখালি-নন্দীগ্রাম সড়ক যৌথভাবে অবরোধ করছে নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি এবং তৃণমূল।