সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: গত কয়েকবছরে মোদি (PM Modi), শাহ (Amit Shah), যোগীদের (Yogi Adityanath) হাত ধরে দেশের বিভিন্ন এলাকা, বিশেষ করে ইসলামি সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িত নাম পরিবর্তনের ঘটনা ঘটেছে আকছার। মুঘলসরাই স্টেশন, এলাহাবাদ, অযোধ্যার নাম হয়েছে দীনদয়াল উপাধ্যায়, প্রয়াগরাজ ও অযোধ্যা। বুধবার কার্যত ‘গায়ের জোরে’ দক্ষিণ দিল্লি পুরনিগম এলাকার মহম্মদপুর গ্রামের নাম পালটে মাধবপুরম করেছেন স্থানীয় কাউন্সিলর, দিল্লি বিজেপি (BJP) সভাপতি। তাতেও অবশ্য থামার কোনও শেষ নেই। তাদের তালিকায় রয়েছে আরও চল্লিশটি গ্রাম ও এলাকার নাম।
বৃহস্পতিবার দিল্লির (Delhi) মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে চিঠি লিখে এই অঞ্চলগুলিকে ‘দাসত্বের প্রতীক’ থেকে মুক্ত করার দাবি করেছেন দিল্লি বিজেপি সভাপতি আদেশ গুপ্তা। এবার অবশ্য অত্যন্ত সুচারুভাবে ঢাল করা হয়েছে বিভিন্ন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও দেশের অন্যান্য কৃতী মানুষদের। গুরু গোবিন্দ সিং, বাল্মীকি, রবিদাস থেকে শুরু করে লক্ষ্মীবাই, মঙ্গল পাণ্ডে হয়ে মিলখা সিং, লতা মঙ্গেশকর, কারগিলে শহিদ ক্যাপ্টেন বিক্রম বাত্রাদের নামের আড়ালে পরিবর্তন করতে চাওয়া হয়েছে হাউজ খাস, শাহিবাবাদ, নজফগড়ের মতো এলাকার নাম।
[আরও পড়ুন: বাংলার জলকন্যার বিশ্বজয়, মলোকাই চ্যানেল জয় করে রেকর্ড গড়লেন কালনার সায়নী দাস]
বিজেপির দাবি, সম্প্রতি মহম্মদপুর গ্রামের স্থানীয় কাউন্সিলর দক্ষিণ দিল্লি পুরনিগমের কাছে গ্রামের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেন। যা পাস হয়ে যাওয়ায় বুধবার তারা সরকারি নামফলকের উপর নতুন সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, এভাবে গ্রাম বা এলাকার নাম পরিবর্তনের অধিকার পুরনিগমকে কে দিল? এই অধিকার রাজ্যের আওতাভুক্ত।
আদেশ গুপ্তার দাবি, একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে খুশি করতে কেজরিওয়াল সরকার নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব পাস হয়ে গেলেও ব্যবস্থা নেয়নি। দিল্লিবাসীদের দাবি ও চাহিদা মেনে দাসত্বের প্রতীক থেকে মুক্তি দিতেই তাঁরা নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে এই কাজ করেছেন। সামাজিক মাধ্যমে আবার এই প্রসঙ্গে ঘুরতে শুরু করেছে নানা বক্তব্য। বিজেপিপন্থীরা যখন বলছেন, এর প্রয়োজন ছিল। তখন বেশিরভাগেরই বক্তব্য, ক্ষমতায় বিজেপি, সেখানে কোন দুঃসাহসে কোনও এলাকার নাম অ-হিন্দু হতে পারে? বিশেষ করে কোনও মুসলমান নাম? কোনও সম্ভাবনাই নেই। তাই এইসব হচ্ছে।