বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: রামমন্দির (Ram Mandir) উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র ফেরাতেই কংগ্রেসকে নিশানা করল গেরুয়া শিবির। পালটা বিজেপিকে নিশানা করেছে গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীর (Prahlad Joshi) অভিযোগ, “তোষণের রাজনীতি করতে গিয়ে কংগ্রেস লাগাতার হিন্দু বিশ্বাসের বিরুদ্ধাচরণ করে চলেছে। গত দু’-চার দশকে যতবারই রাম মন্দিরের প্রসঙ্গ এসেছে প্রতিবারই তার বিরোধিতা করেছে। এমনকী এও বলেছে, রাম কাল্পনিক চরিত্র। বর্তমান কংগ্রেস পার্টি তোষণের তুঙ্গে পৌঁছে গিয়েছে।” পালটা কংগ্রেসের তরফে জাতীয় কর্মসমিতির সদস শচীন পাইলট গেরুয়া শিবিরকে আক্রমণের নিশানা করে জানান, বিজেপির কাছ থেকে কংগ্রেস হিন্দুত্বের পাঠ নেবে না। তাঁরা কি সনাতনীদের ঠিকাদারি নিয়ে রেখেছে নাকি? সংবিধান সকল ভারতবাসীকে নিজের ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে। বিজেপি আসলে ভোটের ময়দানে বিভাজনের রাজনীতি করতে নেমেছে।
বুধবার রামমন্দির উদ্বোধনে যাবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস (Congress)। মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার রাজনীতি করছে। এই অনুষ্ঠানটি তাদের। তাই সম্মানের সঙ্গে আমন্ত্রণ প্রত্যাহার করা হচ্ছে বলে জানায় শতাব্দীপ্রাচীন দল। ইন্ডিয়া (INDIA) জোটের একের পর এক শরিক মন্দির উদ্বোধনে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে ব্যাকফুটে চলে যায় পদ্মপক্ষ। দেশের সচেতন নাগরিকদের পাশাপাশি মন্দির নির্মানের সঙ্গে জড়িত সঙ্ঘ পরিবার বাদে অন্যান্য ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনগুলির কাছে বিজেপি বিরোধী বার্তা দেওয়া গিয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক কারবারিরা।
[আরও পড়ুন: ‘ভারতীয়দের জন্য যুদ্ধ থামিয়েছিল রাশিয়া-ইউক্রেন’, অপারেশন গঙ্গা নিয়ে মোদির প্রশংসায় রাজনাথ]
কারণ মন্দির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির রাজনীতি সহজভাবে নিচ্ছে জড়িত অনেক সংগঠন। তাই বিপাকে পড়ে কংগ্রেস ও তৃণমূল-সহ ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের আক্রমণে নেমেছে গেরুয়া শিবির। যোশী বলেন, “রামমন্দির উদ্বোধনের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ ফেরানোয় অবাক হয়নি।” অতীত ইতিহাস টেনে জানান, “কংগ্রেস চিরকালই হিন্দুত্বের বিরোধী। সোমনাথ মন্দির পুনর্নির্মাণ করেছিলেন সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল, বাবু রাজেন্দ্র প্রসাদ এবং কেএম মুন্সি। সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জওহরলাল নেহরু। তিনি সোমনাথ দর্শনে যাননি। তাই কংগ্রেসের বর্তমান নেতৃত্ব কীভাবে অযোধ্যা যাবেন?” বিজেপি নেতা সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, “এটা নেহরুর কংগ্রেস, গান্ধীর কংগ্রেস নয়। মহাত্মা গান্ধী প্রায়ই গাইতেন, রঘুপতি রাঘব রাজা রাম। আর আজকের কংগ্রেস প্রাণপ্রতিষ্ঠার অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছে না। এটা প্রমাণ করে, কংগ্রেস হিন্দু ধর্ম ও হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে।”
[আরও পড়ুন: তাইওয়ানের নির্বাচনে কলকাঠি নাড়ছে চিন? হুঁশিয়ারি উদ্বিগ্ন আমেরিকার]
এর পরেই গেরুয়া শিবিরকে পাল্টা আক্রমণ শানায় কংগ্রেস। শচীন পাইলটের অভিযোগ, “মানুষের সমস্যাগুলিকে ইন্ডিয়া জোট ইস্যু করায় বিজেপি বিপাকে পরে গিয়েছে। তাই রামের শরণাপন্ন হয়েছে। দেশের মূল সমস্যাগুলি নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই অকারণ বিরোধীদের নিশানা করছে। বিজেপি (BJP) ধর্ম ও রাজনীতিকে মিশিয়ে ফেলেছে। তাই রামকে দখল করতে নেমেছে। রাম সনাতনী হিন্দু সকলের।”