সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিরডি 'সাঁইবাবাকে অপমান'! মহারাষ্ট্রে একযোগে সরব কংগ্রেস ও বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীর কয়েকটি মন্দির থেকে শিরডি সাঁইবাবার মূর্তি সরানো হয়েছে বলে অভিযোগ। তার জেরে উত্তাপ ছড়াল ভোটমুখী মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে। ঠিক কী ঘটেছে?
সাঁইবাবার মূর্তি সরানোর ঘটনায় বিজেপি প্রতিবাদে নামলেও ওই কাজে অভিযুক্ত একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, ‘সন্তান রক্ষক দল’ নামে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বারাণসীর ঘটনার জন্য দায়ী। ওই সংগঠনের সদস্যেরা দাবি করেন, সাঁইবাবা দেবতা নন, মানুষ। তাই মন্দিরে দেবতাদের সঙ্গে তাঁর পুজো করা যাবে না। এর বিরোধিতা করে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা বালাসাহেব থোরাট বলেন, "সাঁইবাবা জাত, বর্ণ ও ধর্মের ঊর্ধ্বে ছিলেন। বারাণসীতে যা ঘটেছে তা দুর্ভাগ্যজনক।" ড্যামেজ কন্ট্রোলে গেরুয়া দলও আসরে নেমেছে। মহারাষ্ট্র বিজেপির প্রধান চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে বুধবার বিবৃতি দেন, সাঁইবাবা এক জন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। তাঁর মতো সাধককে অপমান করার অধিকার কারও নেই। সাঁইবাবার মূর্তি অপসারণের কাজ অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত।
প্রসঙ্গত, উনবিংশ শতকের গোড়ায় ধর্মগুরু সাঁইবাবার কর্মকাণ্ড ছিল মহারাষ্ট্রের আহমদনগর জেলার শিরডিতে। তাঁকে যোগী, ফকিরও বলা হত। হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের ভক্তরাই তাকে সন্ত আখ্যা দিয়েছিলেন। হিন্দু ভক্তেরা তাকে দত্তাত্রেয়ের অবতার মনে করতেন। অনেক ভক্তের মতে তিনি ছিলেন সদগুরু, সুফি পির বা কুতুব। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে তার পরিচিতি ছড়িয়ে পড়লেও, ভারতেই তিনি সর্বাধিক শ্রদ্ধা অর্জন করেন।
গোটা দেশ থেকে সারা বছর লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী সিরিডির সাঁইবাবার মন্দিরে যান দর্শনের জন্য। সাঁইবাবার মন্দির ও আশ্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত ‘শ্রী সাঁইবাবা সংস্থান ট্রাস্ট’ মহারাষ্ট্র জুড়ে নানা সমাজকল্যাণের কাজ করে। চলতি বছরের নভেম্বর মাসে মহারাষ্ট্রে বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। তার আগে উত্তরপ্রদেশের মন্দির থেকে মূর্তি অপসারণের ঘটনায় বিপাকে পড়েছে বিজেপি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছে, বারাণসীতে সাঁইবাবার মূর্তি সরানোর ঘটনায় মহারাষ্ট্রে অস্বস্তি বাড়বে গেরুয়া শিবিরের।