রূপায়ণ গঙ্গেপাধ্যায়: একুশের ভোটে বঙ্গে ‘ইতিহাস’ গড়েছে বিজেপি (BJP)। শাসকদল হওয়ার স্বপ্ন চুরমার হলেও এই প্রথমবার রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের আসনে বসছে গেরুয়া শিবির। বলা ভাল, বিধানসভায় একমাত্র বিরোধী দল তারাই। কিন্তু বিরোধী দলের নেতা কে হবেন, কার হাতে থাকবে বিধানসভার পরিষদীয় দলের ব্যাটন, তা নিয়ে দলের অন্দরেই দড়ি টানাটানি শুরু হয়েছে। সেই দড়ি টানাটানি রুখতে এবার কেন্দ্রের তরফে জোড়া পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হল। তাঁদের নেতৃত্বেই রাজ্যের বিজেপি বিধায়করা নিজেদের দলনেতা নির্বাচন করবেন। বিজেপির তরফে দলের দুই অভিজ্ঞ মুখ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদবকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
রাজ্যের ভোটের ফলপ্রকাশের পর শিবপ্রকাশ, কৈলাস বিজয়বর্গীরা নিজেদের রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন। পরিবর্তে পাঞ্জাব থেকে কেন্দ্রের প্রতিনিধি হিসেবে এসেছেন তরুণ চুঘ। যিনি ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক দফা রাজ্য নেতাদের সঙ্গে বৈঠক সেরে ফেলেছেন। আসলে রাজ্যের ভোটের ফলাফলের পর বিধায়কদের ধরে রাখাটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে বিজেপির জন্য। তাছাড়া, কর্মীরাও বিমর্ষ। তাই সকলকে একজোট করে রাখতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সর্বক্ষণ রাজ্য নেতাদের পাশে থাকার বার্তা দিতে চাইছেন। সেজন্য বিধানসভার অন্দরে কোনও শক্তপোক্ত মুখকে বিরোধী দলনেতা করতে চাইছে বিজেপি। নেতা নির্বাচনের এই প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের জন্যই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রবিশংকর প্রসাদ ও দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদবকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ভোটে হেরে দলবিরোধী মন্তব্য করা সিপিএম নেতারা পড়তে পারেন শাস্তির মুখে, ইঙ্গিত বিমান বসুর]
বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী সোম বা মঙ্গলবার দলের বিধায়কদের বৈঠক ডেকে বিরোধী দলনেতা নির্বাচন করা হবে। আর এই পদে বসার দৌড়ে সবার থেকে এগিয়ে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। মুকুল রায় শুরুর দিকে লড়াইয়ে থাকলেও ভগ্ন স্বাস্থ্যের জন্য মুকুলবাবু পিছিয়ে পড়েছেন। তাছাড়া দলের অধিকাংশ বিধায়কের মতও নাকি শুভেন্দুর দিকেই। তাঁরা মনে করছেন, বিরোধী দলনেতা হলে গোটা রাজ্য চষে বেড়াতে হবে, যা এই মুহূর্তে মুকুলের পক্ষে সম্ভব না। তাছাড়া, শুভেন্দুই পারেন রাজ্যের শাসকদলকে বিধানসভার ভিতরে এবং বাইরে সমানে টক্কর দিতে। সূত্রের খবর, দিল্লির নেতারাও শুভেন্দুকেই ওই পদে চাইছেন। তবে, দলের পুরনো কোনও সংঘ ঘনিষ্ঠ নেতার কথাও ভাবা হতে পারে।