নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বাংলা-সহ দশ রাজ্যের ষাটোর্ধ্ব নাগরিকের ভোটের দিকে নজর বিজেপির (BJP)। আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য তারা ঘর গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। তাতেই দেশের প্রায় ১৩ কোটি ষাটোর্ধ্ব মানুষের ভোটের সিংহভাগ নিজেদের দখলে আনতে চাইছে গেরুয়া শিবির। এই লক্ষ্য সামনে রেখে তারা ‘মিশন প্রবীণ’ শীর্ষক কর্মসূচি শুরু করতে চলেছে খুব শীঘ্রই।
কর্মসূচির রূপরেখা একপ্রকার তৈরি হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের দশটি রাজ্য যেখানে ষাটোর্ধ্ব ভোটারের সংখ্যা ৫০ লক্ষের বেশি, তাদের দিকেই বিশেষ নজর দেওয়া হবে বলেই ঠিক হয়েছে। রাজস্থান, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানাও এই তালিকায় রয়েছে। ষাটোর্ধ্ব নাগরিকদের ভোট পাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গে বিজেপির এক কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, “২০১৯ সালে বিজেপি মিলেনিয়াল ভোটার, তরুণ প্রজন্মের ভোট পাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দিয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে, আমাদের আসন সংখ্যা বেড়েছে কিন্তু ২০১৪ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে আমাদের দল ষাটোর্ধ্ব ভোটারদের ভোট কম পেয়েছে। তাই এবার তরুণদের পাশাপাশি প্রবীণদের ভোটের দিকেও বিশেষ নজর দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: নোটবন্দি কি আদৌ প্রাসঙ্গিক? কেন্দ্রের কাছে হলফনামা তলব সুপ্রিম কোর্টের]
এককথায় আগামী লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপি এখন থেকেই এমন একটি কৌশল নিতে চাইছে, যাতে প্রবীণদের ভোটের উপর ভর করে তারা ২০১৯ সালে জেতা আসনগুলিতে ভোটের ভাগ বাড়াতে পারে ও হারানো আসনগুলি বেশিরভাগই নিজেদের ঝুলিতে আনা যায়। বিজেপি সূত্রের খবর, কীভাবে ষাটোর্ধ্ব ভোটারদের কাছে টানা হবে তার জন্য দশ দফা পদক্ষেপ করা হবে বলে ঠিক হয়েছে। যে সমস্ত বয়স্ক একা থাকেন, তঁাদের সঙ্গে দলের কর্মীরা যোগযোগ করবেন এবং তঁাদের সুবিধা-অসুবিধা, বিশেষ করে নিরাপত্তা ও চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রয়োজনের উপর নজর রাখবেন।
প্রবীণরা কোনওরকম আর্থিক সমস্যার মধ্যে থাকলে তঁাদের সেই সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করা এবং তাঁদের বিকল্প আয়ের রাস্তা দেখানো হবে। বয়স্করা সরকারি দফতরে কোনও কাজের জন্য গেলে সহজেই যাতে তঁাদের কাজ হয়ে যায় সেদিকে নজর রাখার জন্য কর্মীদের টিম তৈরি করা হবে। প্রবীণরা যাতে দলের সদস্যপদ গ্রহণ করেন, তার জন্য বিশেষ সদস্যপদ অভিযান চালানো হবে। পাশাপাশি দলের শাখা সংগঠনের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগের ব্যবস্থা করারও চেষ্টা করবে বিজেপি। প্রবীণদের জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী এবং উৎসবের সময়ে শুভেচ্ছাবার্তা দেওয়া হবে। সশরীরে তো বটেই, পাশাপাশি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপের মতো সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রবীণদের সঙ্গে নিয়মিত সম্পর্ক রাখবেন বিজেপির কর্মীরা। দলের প্রবীণ নেতারা বয়স্কদের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক করবেন। এমনকী আলাদা করে জনসভাও করা হবে প্রবীণদের জন্য। দলের নির্বাচনী ইস্তাহার তৈরির আগে দেশের প্রবীণদের কাছ থেকে পরামর্শ চাওয়ারও পরিকল্পনা করেছে বিজেপি।