সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২০১৭ উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আগে যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) মুখে শোনা গিয়েছিল ‘শ্মশান-কবরস্থান’ তত্ত্ব। ২০২২ বিধানসভা নির্বাচনের আগেও একইভাবে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল ‘কবরস্থান’ শব্দটি। আরও একবার তিনি ‘আমরা এবং ওরা’র মধ্যে স্পষ্ট বিভেদ তৈরি করার চেষ্টা করলেন। ২২-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগেও যে তাঁর মূল অস্ত্র হতে চলেছে হিন্দুত্বই, তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন যোগী।
মঙ্গলবার অযোধ্যায় দীপোৎসবের সূচনামঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ বলেন,”এখানে আগের সরকার সরকারি টাকা কবরস্থানের পিছনে খরচ করত। এখন সরকারি টাকা খরচ হয় মন্দির তৈরি এবং মন্দিরের উন্নয়নের কাজ।” সরাসরি হিন্দু বা মুসলিম শব্দগুলি উচ্চারণ না করেও যোগী বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁর সরকার থাকলে সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় কাজে অর্থব্যয় হবে না। বরং তা করা হবে সংখ্যাগুরু হিন্দুদের ধর্মকর্মে। যোগী এদিন বলেছেন,”এটাই চিন্তাভাবনার পার্থক্য। যাদের মাথায় সবসময় কবরস্থানের চিন্তা থাকে, তারা টাকাও খরচ করে কবরস্থানের জন্য। আর যারা মন্দিরের চিন্তা করে, সংস্কৃতির চিন্তা করে, ধর্মের চিন্তা করে তারা মানুষের টাকা ব্যবহার করে মন্দির তৈরিতে বা মন্দিরের উন্নয়নের স্বার্থে।”
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রের পথে হেঁটে পেট্রল-ডিজেলে বড় অঙ্কে VAT কমাল ৯ বিজেপি শাসিত রাজ্য, চাপে বিরোধীরা]
শুধু তাই নয়, ভোটের মুখে রাম মন্দির (Ram Mandir) তৈরির কৃতিত্বও নিজেদের বলে দাবি করেছেন যোগী। বলে দিয়েছেন,”আজ থেকে ৩০ বছর আগে এদেশে করসেবা করলে গুলি বর্ষণ হত। কিন্তু এরপর যখন করসেবা হবে, তখন আর গুলি চলবে না, বরং পুস্পবৃষ্টি হবে। এটাই ওদের সরকার আর আমাদের সরকারের পার্থক্য।” উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মুখ্যমন্ত্রী এদিন স্পষ্টতই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তিনি ক্ষমতায় থাকলে রাজ্য সংখ্যাগুরু হিন্দুদের সমস্তরকম ধর্মীয় রীতিনীতি পালনে সরকার সাহায্য করবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এভাবে সরকারি টাকা নির্দিষ্ট ধর্মের কাজে ব্যবহার করা যায় কি? সরকারি টাকায় কবরস্থান তৈরি যদি অন্যায় হয়, তাহলে মন্দির তৈরিটাও কি অন্যায় নয়?
[আরও পড়ুন: ‘গোটা দেশ আপনার পাশে আছে’, আরিয়ান জেলে থাকাকালীনই শাহরুখকে চিঠি লিখেছিলেন রাহুল]
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, এতদিন ‘উত্তমপ্রদেশে’র, উন্নয়নের বুলি আওড়ে এসে ভোটের ঠিক আগে এসে কেন ফের ধর্মীয় তাস খেলতে হচ্ছে যোগী আদিত্যনাথকে? তাহলে কি বিরোধীদের লাগাতার আন্দোলনে কিছুটা চাপে যোগী। যদিও, এদিন ধর্মীয় তাস খেলার পাশাপাশি আরও বড় দুটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যোগী সরকার। প্রথমত পেট্রল ও ডিজেলের (Petrol-Diesel Price) ভ্যাট ১২ টাকা করে কমিয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। দুই, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার আওতায় যারা বিনামূল্যে রেশন পেতেন, তাঁদের এই সুবিধা হোলি পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া।