রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ১০ বছরের শাসনকালে কাজের সাফল্যের খতিয়ান দিয়ে তৃণমূল (TMC) সরকার পেশ করেছিল রিপোর্ট কার্ড। তার পালটায় এবার গত দশ বছরে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরতে ‘তৃণমূল ফেল কার্ড’ প্রকাশ করল বিজেপি (BJP)। রাজ্যের অর্থনীতি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তৃণমূল সরকার ব্যর্থ। এই অভিযোগের পক্ষে পালটা তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরল বিজেপি। সোমবার হেস্টিংসের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে ‘তৃণমূল ফেল কার্ড’ বুকলেট প্রকাশ করলেন বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য ও রাজ্য নেতা শিশির বাজোরিয়া।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত বলেন, ”দশ বছরে তৃণমূল সরকারের ব্যর্থতার কাহিনি আমরা বুকলেট দিয়ে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে চাই। শুধু অর্থনৈতিক নয়, রাজনৈতিক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, মহিলা সুরক্ষা-সহ আরও অনেক বিষয়ে রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা ও বাংলার দুর্দশার কাহিনি তুলে ধরা হয়েছে এই বুকলেটে।” তাঁর অভিযোগ, এনসিআরবি’র (NCRB) রিপোর্ট অনুযায়ী, মহিলাদের উপর আক্রমণে বাংলা সারা দেশে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টা এবং মহিলাদের উপর অ্যাসিড হামলায় রাজ্যের স্থান প্রথম।
[আরও পড়ুন: রাজ্যে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ, রাজ্যপালের দ্বারস্থ বিরোধীরা]
দলের রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, তৃণমূল সরকার উন্নয়নের খতিয়ান দিয়ে যে রিপোর্ট কার্ড পেশ করেছে আসলে তা অসত্য এবং বাস্তব থেকে বহু দূরে। বাংলায় কোনও বিনিয়োগ নেই। তাঁর দাবি, বাম আমলের শেষ দিকে ১৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ ছিল। তারপর তৃণমূল সরকারের প্রথম বছর ৩১৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়। কিন্তু এরপর থেকে আর বিনিয়োগ হয়নি। শমীকবাবুর আরও দাবি, কর্মসংস্থান নিয়ে যা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে বাস্তবের মিল নেই।
[আরও পড়ুন: অনেকটাই সুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, হাসপাতালে শুয়েই রাখছেন দেশ-দুনিয়ার সব খবর]
ঋণ ইস্যুতেও রাজ্য সরকার যে ডাহা ফেল, সেই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বিজেপির এই বুকলেটে। শমীক ভট্টাচার্য পরিসংখ্যান দিয়ে দাবি করেন, দশ বছর আগে এখানে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ২৫ হাজার টাকা ছিল। সেটা বেড়ে হয়েছে ৬৫ হাজার টাকা। রাজ্যের ঋণের পরিমাণ ৪ লক্ষ কোটির বেশি হয়ে গিয়েছে।
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন নিয়েও মমতা সরকারকে বিঁধেছে বিজেপি। দলের নেতা শিশির বাজোরিয়ার অভিযোগ, ”বিজনেস গ্লোবাল সামিট হলেও লগ্নির চিহ্ন নেই। বাংলার অর্থনীতির পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। জিডিপি ৬.০৩ শতাংশ থেকে ৫.২৫ শতাংশে নেমে এসেছে।” শিল্পে বিনিয়োগের উপযুক্ত পরিবেশ এখানে নেই, সরকারের কোনও জমি নীতি নেই বলেও তোপ দেগেছেন তিনি।