সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: কোটি টাকার মাদক পাচার করতে গিয়ে এসটিএফের হাতে গ্রেপ্তার বিজেপি নেতা। বাজেয়াপ্ত মাদকের বাজার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চরমে উঠেছে বিজেপি ও তৃণমূলের রাজনৈতিক বিবাদ। এসটিএফের দাবি, ধৃত বিজেপি নেতা আন্তঃরাজ্য মাদক পাচারচক্রের এক গুরুত্বপূর্ণ 'ক্যারিয়ার'।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে কাঁকসা থানার পানাগড়ের বিডিও মোড় সংলগ্ন পানাগড়-মোড়গ্রাম রাজ্য সড়কের আন্ডারপাশের নিচ ইতস্তত ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় টহলরত পুলিশের। জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে তাঁকে আটকায় কাঁকসা থানার পুলিশ। ততক্ষণে বিশেষ সূত্রে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হয় এসটিএফও। এসটিএফ ও কাঁকসা থানার পুলিশ যৌথভাবে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
কাঁকসা থানার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত বুদবুদ থানার শুকডাল গ্রামের বাসিন্দা অজিতকুমার দাস। অজিত দাস বিজেপির বুদবুদ মন্ডলের আহ্বায়ক। জানা গিয়েছে, তিনি আসানসোল থেকে বাসে চেপে কাঁকসায় আসে। বাস থেকে নেমে ফের উত্তরবঙ্গে যাওয়ার ছক করছিলো। অজিত কুমার দাসের ব্যাগ তল্লাশি করতেই উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ ব্রাউন সুগার। তাঁর কাছে দুটি ট্রেনের টিকিটও উদ্ধার করে পুলিশ। এসটিএফ ও কাঁকসা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গ্রেপ্তার করে তাঁকে। তাঁর কাছে থাকা একটি বাজারের ব্যাগ থেকে প্রায় কোটি টাকার ব্রাউন সুগার উদ্ধার করা হয়। মাদকের পরিমাণ ১ কেজি ১২০ গ্রাম। এদিন ধৃতকে আসানসোল জেলা আদালতে তোলা হলে আদালত ধৃতের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়।
এই আন্তঃরাজ্য মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা ও এই বিপুল পরিমাণ মাদক ধৃত কোথায় বা কাকে সরবরাহ করতো তা ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হবে বলে জানান আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশের এসিপি (কাঁকসা) সুমন কুমার জয়সওয়াল। তবে ধৃতের বিজেপি যোগ নিয়ে চরম রাজনৈতিক বিবাদের সৃষ্টি হয়েছে। বছর খানেক আগে ধৃত আগ্নেয়াস্ত্র সমেত বুদবুদ বাজারে গ্রেপ্তার হন পুলিশের হাতে। এই ঘটনা নিয়ে বিজেপির পূর্ব বর্ধমানের সহ - সভাপতি রমণ শর্মা বলেন, তৃণমূল নেতাও তো হাতির দাঁত পাচার করতে গিয়ে ভিন রাজ্যে গ্রেপ্তার হচ্ছেন। এই রাজ্যে তো আইনের শাসন চলে না শাসকের আইন চলে।" পাল্টা তৃণমূলের গলসি ১ নম্বর ব্লকের সভাপতি জনার্দন চট্টোপাধ্যায় জানান, " এই সব আইন তো কেন্দ্রের তৈরি। তো ওনারা ওদের সুবিধা মতোন আইন তৈরি করতে বলুক বিজেপি বা কেন্দ্র সরকারকে।"