ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘রাজ্য বাজেট আসলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা।’ এমনই কটাক্ষ করলেন বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী (BJP MLA Ashok Lahiri)। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বাজেট ভাষণ দিতে গিয়ে রাজ্য সরকারের আর্থিক নীতি নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্যের গত তিন বছরে আর্থিক খরচের হিসাব অডিট করার দাবি জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। পাশাপাশি, তাঁর আরও অভিযোগ, প্রস্তাবিত বাজেটের সঙ্গে আসল খরচের বিস্তর ফারাক রয়েছে। কেন এই ফারাক, তা জানতে অডিটর জেনারেলকে দিয়ে অডিট করার দাবি জানিয়েছেন অশোকবাবু।
এদিন বাজেট ভাষণ দিতে দিয়ে রাজ্যের প্রকল্পে সুবিধাভোগী কারা, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিজেপি বিধায়ক। এদিন অশোক লাহিড়ী বলেন, “রাজ্যে ৪৭টি প্রকল্প চলছে। সেইসব প্রকল্পে সুবিধাভোগী কারা? তার তালিকা প্রকাশ করা হোক। রাজ্য সরকার গত ১০ বছরের অনেক জনদরদি প্রকল্প অনুমোদন করেছেন। কিন্তু সেই প্রকল্পের সুবিধে ঠিক কারা কারা পাচ্ছেন, কত মানুষ পাচ্ছেন, রাজ্যের কত টাকা ব্যয় হচ্ছে তার উল্লেখ নেই বাজেটে। কীভাবেই বা প্রকল্পগুলি চালানো হচ্ছে তার দিশা খুঁজে পাওয়া যায়নি বাজেটে। রাজ্যের জনকল্যাণ প্রকল্পে কেন্দ্রর কত অনুদান নিচ্ছে রাজ্য সরকার তাও বাজেটে উল্লেখ নেই।”
[আরও পড়ুন: কল সেন্টারে প্রতারণা, অনলাইনে কম্পিউটার সারানোর নামে অ্যাকাউন্ট সাফ, ধৃত ১২]
তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে GST আদায় অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় কম। যা রাজ্যের উন্নয়নে প্রভাব ফেলবে। ২০১৭-১৮এবং ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে রাজস্ব আদায়ও কমে গিয়েছে।” বাজেট প্রস্তাবে রাজ্য দাবি করেছে, দেশে টিকাকরণে একনম্বর এ রাজ্য। এ নিয়েও মমতা সরকারকে খোঁচা দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক। বলেন, “রাজ্যের মানুষকে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ২.৩০ কোটি ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কেন্দ্র সরকার কত ভ্যাকসিন দিয়েছে রাজ্য সরকার কত ভ্যাকসিন কিনেছে তা বাজেটে স্পষ্ট নয়।”
এদিকে পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যুতে রাজ্যকে খোঁচা দিয়েছেন আরেক বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। কেন্দ্রের দেওয়া তথ্যকে হাতিয়ার করে তিনি বলেন, “লোকসভায় গত ফেব্রুয়ারি মাসে উল্লিখিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১.২৩ কোটি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন দেশে। তার মধ্যে ১১% বাংলার। অর্থাৎ ১১,১২ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রাজ্যের বাইরে যাচ্ছেন। যা গোটা বছরের হিসেবে দাঁড়াচ্ছে ৪০ লক্ষ।” বিজেপি বিধায়কের অভিযোগ, ওই শ্রমিকদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি বর্তমান সরকার। কর্ম সংস্থানের সুযোগ নেই বলে মালদা, মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষকে সামান্য রোজগারের জন্য ভিন রাজ্যে যেতে হয় বলেও দাবি তাঁর। রাজ্যের বেকারত্ব খতিয়ান তুলে ধরেও তৃণমূল সরকারকে বিঁধেছেন তিনি। শ্রীরূপা দেবীর দেওয়া তথ্যানুযায়ী, “২০২১ সালের মে মাস পর্যন্ত ১৬টি জুট মিল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ৫০ হাজার মানুষ বেকার হয়েছে।”