রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একাধিক সভা, প্রচারের পরেও ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে ভরাডুবি বিজেপির। শুক্রবার ভোটের ফলাফল প্রকাশের পর স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির। ঠিক কী কারণে ভোটারদের মন জয় করতে পারল না বিজেপি, কারণ খুঁজতে শনিবারই রাজ্যে আসছেন বি এল সন্তোষ। বিপর্যয়ের কারণ খুঁজতে দু’দিন ধরে চলবে বৈঠক।
গত ৫ তারিখ ধূপগুড়িতে উপনির্বাচন (Dhupguri By-Election) হয়েছে। মূলত ত্রিমুখী লড়াই ছিল। তৃণমূলের নির্মলচন্দ্র রায়, বিজেপির তাপসী রায় ও বাম-কংগ্রেস জোটপ্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়ের মধ্যেই ছিল লড়াই। তবে শুক্রবার গণনা শুরু হতেই দেখা যায়, তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। অনেক পিছিয়ে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়। আর তাই তৃতীয় রাউন্ড গণনা শেষেই গণনাকেন্দ্র ছেড়ে চলে যান তিনি।
[আরও পড়ুন: আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে পোশাক খুলতে ‘চাপ’, কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলে ‘ব়্যাগিং’য়ে অভিযুক্ত ৫ ছাত্র]
গণনা শুরুর দু-এক রাউন্ডে এগিয়ে ছিল বিজেপি। কিন্তু গ্রামাঞ্চল ও চা বলয়ের (Tea Garden) দিকের এলাকাগুলিতে যত এগোতে থাকে গণনা, ততই এগিয়ে যেতে থাকে শাসকদল। মোট দশ রাউন্ড গণনা হয়। তাতে তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের প্রাপ্ত ভোট মোট ৯৬,৯৬১। বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায়ের ঝুলিতে এসেছে ৯২,৬৪৮ ভোট। আর অনেক পিছিয়ে মাত্র ১৩,৬৬৬ ভোট পেয়েছেন বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়। অর্থাৎ ৪৩১৩ ভোটে জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী। আর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) আগে এই জয় নিঃসন্দেহে বড় ইঙ্গিতবাহী।
ওয়াকিবহাল মহলের মতে, সাধারণত উপনির্বাচনে শাসকদলই জেতে। তবে সাগরদিঘি উপনির্বাচনে সেই প্রচলিত ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। তারপর ধূপগুড়ি নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন বিরোধীরা। তবে তৃণমূলের কাছেও ধূপগুড়ি উপনির্বাচন ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। নিজে গিয়ে প্রচার করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপির তরফে যদিও প্রচারে কোনও খামতি ছিল না। শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার ধূপগুড়ি গিয়ে পড়েছিলেন। অভিষেকের সভার পর রাতারাতি তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায়ের হাতে পদ্মশিবিরের পতাকা ধরিয়ে দিয়ে কার্যত সকলকে চমক দিয়েছিলেন সুকান্ত। তবে তা সত্ত্বেও ফলাফল শূন্য। সেই ঘাসফুলই ফুটল ধূপগুড়িতে। যা বিজেপির কাছে যথেষ্ট অস্বস্তিকর। ঠিক কী কারণে তীরে এসে তরী ডুবল গেরুয়া শিবিরের, তা নিয়ে চিন্তিত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আর সেই কারণ খুঁজতেই রাতারাতি বঙ্গে আসছেন শাহী ‘দূত’ বি এল সন্তোষ।