চঞ্চল প্রধান, হলদিয়া: নন্দীগ্রাম কি দখলে থাকবে তৃণমূলের নাকি শুভেন্দুর দলবদলের ম্যাজিকে তা ছিনিয়ে নেবে বিজেপি? সেই প্রশ্নেই আপাতত মুখর রাজনৈতিক মহল। শাসক-বিরোধীর অন্দরেও তা নিয়ে আলোচনার শেষ নেই। তাই নন্দীগ্রামকে পাখির চোখ করে এগোচ্ছে দু’পক্ষই। সেখানেই গত ৭ জানুয়ারি সভা করার কথা ছিল তৃণমূলের। উপস্থিত থাকার কথা ছিল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। তবে অখিল খিরি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় বদলে যায় দিনক্ষণ। স্থির হয়েছে আগামী ১৮ জানুয়ারি সভা করবে তৃণমূল। তারই পালটা জবাব দিতে ফের সভার ডাক দিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। নন্দীগ্রামের সভামঞ্চ থেকে জানালেন আগামী ১৯ জানুয়ারি খেজুরিতে পালটা সভা করবে বিজেপি।
শুভেন্দুর দলবদলের পর থেকে রাজ্য রাজনীতিতে ফের প্রাসঙ্গিক নন্দীগ্রাম (Nandigram)। বৃহস্পতিবারই ছিল নন্দীগ্রাম দিবস। ওইদিন প্রায় দিনভর বিজেপি-তৃণমূলের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলেছে। বাক তরজা পৌঁছয় চরমে। তার পরেরদিন অর্থাৎ শুক্রবার রাজনৈতিক উত্তাপে তপ্ত নন্দীগ্রাম। হাইভোল্টেজ সভামঞ্চ থেকে তৃণমূলকে বিঁধলেন শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায় (Mukul Roy), কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও দিলীপ ঘোষরা। এদিন একেবারে ভিন্ন সুর মুকুল রায়ের গলায়। তিনি বলেন, “সিঙ্গুরের আন্দোলন ভুল হয়েছিল। বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে টাটাকে ফেরাতে আবেদন করবে।” তারপরই মঞ্চে ওঠেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনিও তৃণমূলকে একাধিক ইস্যুতে তোপ দাগেন। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরও একবার ‘ভাইপো’ বলে কটাক্ষ করেন।
[আরও পড়ুন: মালদহে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রকে ‘অপহরণ ও খুন’, পুলিশের জালে সহপাঠী-সহ ৪]
সভাস্থলে বসা নিয়ে বিশৃঙ্খলার ফলে নন্দীগ্রামের জনসভার কিছুটা তাল কাটে। তারপরই মঞ্চে ওঠেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় চাঁচাছোলা ভাষায় ঘাসফুল শিবিরকে আক্রমণ শানান তিনি। বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলবদলের হিড়িক লেগেছে। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ বিজেপি রাজ্য সভাপতির। তাঁর দাবি, “তৃণমূল দলবদল নিয়ে ভয় পাচ্ছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। রান্নাঘরে গেলে রান্নাঘর, বাথরুমে গেলে বাথরুমে পুলিশ যাচ্ছে।” তাঁর গলাতেও শোনা গিয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) নাম না করে আক্রমণের ঝাঁঝ। এছাড়াও আমফান-সহ একাধিক ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগেও সরব গেরুয়া শিবির। আগামী সভা থেকে পালটা ঘাসফুল শিবির কীভাবে আক্রমণের সুর চড়ায়, সেদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।