সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হজরত মহম্মদকে (Prophet Mohammad Row) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে অশান্তি। গত শনিবার কানপুরে ভয়াবহ হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। এক সপ্তাহ পরে সেই বিক্ষোভের মূল অভিযুক্তের এক আত্মীয়ের বাড়ি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হল। এহেন অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতিতে যোগী আদিত্যনাথের মিডিয়া উপদেষ্টা মৃত্যুঞ্জয় কুমারের একটি টুইট ঘিরে ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নেটদুনিয়ায়। হরিয়ানা বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অরুণ যাদবও টুইট করে বলেছেন, পাথর ছোঁড়ার পালটা হতে পারে বুলডোজার।
কানপুরের জয়েন্ট কমিশনার অফ পুলিশ আনন্দ প্রকাশ তিওয়ারি জানিয়েছেন, “গত শনিবারে হিংসার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত জাফর হায়াত হাশমির ঘনিষ্ঠ ব্যক্তির বাড়ি ভেঙে দিয়েছে কানপুর ডেভলপমেন্ট অথরিটি। আইন মেনেই এই বাড়ি ভাঙার কাজ করা হয়েছে।” প্রসঙ্গত, মূল অভিযুক্ত জাফর-সহ পাঁচজনকে তিনদিনের পুলিশ হেফাজতে রাখাতে নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় আদালত।
শুক্রবার উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) নানা জায়গায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পাথর ছোঁড়া-সহ নানা অভিযোগে মোট ২২৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবারের প্রার্থনা শেষ হওয়ার পরে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। তারপরেই অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস চালায় পুলিশ। শনিবার অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই আবহেই ফের বিজেপি নেতাদের টুইট নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
[আরও পড়ুন: পয়গম্বর মন্তব্য বিতর্কের জেরে দেশজুড়ে অশান্তি! রাজ্যগুলিকে সতর্ক করল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক]
মৃত্যুঞ্জয় কুমার একটি বুলডোজারের (Bulldozer) ছবি দিয়ে টুইট করেছেন, “হামলাকারীরা মনে রাখবেন, প্রত্যেক শুক্রবারের পরে কিন্তু শনিবার আসে। ” এই টুইট ঘিরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগেই রামনবমীতে সাম্প্রদায়িক অশান্তি ছড়ানোর পরে বুলডোজার চালিয়ে উচ্ছেদ অভিযান করেছিল বিজেপি শাসিত দিল্লি বোর্ড। তারপর থেকেই বুলডোজারকে সরকারি বলপ্রয়োগের চিহ্ন হিসাবে মনে করেন অনেকেই।
অশান্তির আবহে সামনে এসেছে আরও এক বিজেপি নেতার টুইট। অরুণ যাদবের সেই টুইটেও লেখা রয়েছে বুলডোজার প্রসঙ্গ। তিনি লিখেছেন, “শুক্রবার পাথর ছোঁড়ার দিন ছিল । এবার তাহলে শনিবার বুলডোজার চালানোর দিন হিসাবে ঘোষণা করা হোক।” এই দু’টি টুইট দেখে অনেকের প্রশ্ন, তবে কি দিল্লির মতো উত্তরপ্রদেশেও উচ্ছেদ অভিযান করতে চাইছে সরকার?
শুক্রবারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)। সেই বৈঠকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যেসব সমাজবিরোধীরা শুক্রবার হামলা চালিয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সভ্য সমাজে এই ধরনের মানুষের জায়গা নেই। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন নির্দোষ ব্যক্তিদের কোনও ক্ষতি না হয়। তবে একজন অপরাধীও ছাড় পাবে না।”