রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছেড়ে দিলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় (Locket Chatterjee)। কারণ হিসাবে তিনি বলেছেন, রাজ্যে দলের কর্মীদের নিরাপত্তা নেই। তাঁদের নিরাপত্তা দেওয়া যাচ্ছে না। বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত। তাই তিনি নিজের সুরক্ষা আর চান না। রাজনৈতিক হিংসার প্রতিবাদেই তাঁর এই সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠিতে লকেট বলেছেন, “বাংলায় হিংসা চলছে, দলীয় কর্মীদের সুরক্ষা দেওয়া যাচ্ছে না। তাই আমার নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হোক।”
রবিবার লকেট জানান, “দিন কুড়ি আগেই আমি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলাম। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে সময় লাগে। এখন আর আমার সঙ্গে কোনও নিরাপত্তারক্ষী নেই।” বিধানসভা ভোটের আগে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের জন্য ‘ওয়াই প্লাস’ ক্যাটাগরির নিরাপত্তা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল সিআইএসএফ। লকেটের পাশাপাশি রাজ্যের আরও একাধিক বিজেপি সাংসদকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া, রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা রয়েছে। বাংলায় ভোটে দলের বিপর্যয়ের পর শীর্ষ নেতাদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দলের মধ্যে। বিশেষ করে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে এসেই অনেকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়েছেন। এটা নিয়েও দলের আদি নেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। রাজ্য বিজেপির এক শীর্ষ নেতা তো ফেসবুক পোস্ট করে তৃণমূল থেকে আসা নব্যদের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। লকেট চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বিজেপির নব্যদের তালিকায় পড়েন না। বেশ কয়েক বছর তিনি বিজেপিতে রয়েছেন। দলের মহিলা মোর্চার সভানেত্রী ছিলেন। অনেক লড়াই-আন্দোলন করেছেন। এরপর সাংসদ হয়েছেন। ফলে লকেটের নিরাপত্তা ছাড়ার বিষয়টা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় বলেই মনে করছে দলের অনেকে।
[আরও পড়ুন: বিজেপিতেও শ্বাসকষ্ট? ‘বেসুরো স্বীকারোক্তি ফর্ম’ ভরতে বলছেন দেবাংশু! ব্যাপারটা কী?]
লকেট এদিন বলেন, “বিজেপি কর্মীদের উপর অত্যাচার চলছে। সুদূর গ্রামে দলের মহিলা কর্মীরা আক্রান্ত। আর আমি নিরাপত্তা কর্মী নিয়ে থাকব। মানবিক দিক থেকে এটা আমি মেনে নিতে পারছি না।” গত শুক্রবার থেকেই লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কোনও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নেই। এদিকে, রাজ্যে হিংসার ঘটনা চলায় রাজ্যে বিজেপির নব নির্বাচিত অধিকাংশ বিধায়কদের জন্যই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। সাংসদ শিশির অধিকারী ও তাঁর পুত্র দিব্যেন্দু অধিকারীও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়েছেন। ওয়াই প্লাস ক্যাটাগরির নিরাপত্তা বরাদ্দ হয়েছে তাঁদের জন্য। এই পরিস্থিতিতে সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা ছেড়ে দেওয়ার বিষয়টি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
দেখুন ভিডিও: