রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও অর্ণব দাস: বেশ কয়েকদিন ধরেই জল্পনা চলছে তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh)। শনিবার নতুন করে জল্পনা ছড়ায় রবিবারই নাকি তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন তিনি? এরপরই দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবির সঙ্গে অর্জুন সিংয়ের ছবি দিয়ে ‘স্বাগতম’ লেখা ব্যানার। বারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কাঁচড়াপাড়া ছাড়াও জগদ্দলের মেঘনা মিল, শ্যামনগর ঝাউতলা মোড়-সহ ঘোষপাড়া রোডের বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার পড়তে দেখা যায়।
যদিও অর্জুনের দাবি, বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য তৃণমূল (TMC) এই কাজ করেছে। তিনি বলেন, “বিগত প্রায় এক মাস ধরে দলবদল নিয়ে জল্পনা তো প্রতিদিনই কেউ না কেউ তৈরি করছে। যদি যোগদান সত্যিই করি তাহলে তো সবাই জানতেই পারবে।” যখন একটি মহল বলছে, যে কোনও দিনই শাসকদলে ফিরছেন অর্জুন, তখন যোগদানের জল্পনার বিষয়টি উড়িয়েও দেননি তিনি এদিন। পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন একটি পোস্টও করেছেন। লিখেছেন, “শুনেছি সমুদ্র নাকি আজ নিজেকে নিয়ে গর্ব করে। যেদিকে ঝড় এসেছে সেদিকেই নৌকা নিয়ে চলো।” একই দিনে পোস্টার এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট, এই দুই ঘটনায় প্রশ্ন, অর্জুন সিংয়ের তৃণমূল যোগদান কি শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা?
[আরও পড়ুন: শহরে ৯০ কিলোমিটার বেগে কালবৈশাখী! মেট্রো লাইনে গাছ ভেঙে ব্যাহত পরিষেবা, বন্ধ উড়ান]
বারাকপুরের রাজনৈতিক মহলে কান পাতলে ফিসফাস শোনা যাচ্ছে, শেষ মুহূর্তে কোনও নাটকীয় পরিবর্তন না হলে রবিবার কিংবা চলতি সপ্তাহেই ‘লক্ষ্যভেদ’ করতে পারেন অর্জুন। ফিরতে পারেন নিজের পুরনো দলে। পাট শিল্প নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরোধিতা করা থেকে শুরু হয় অর্জুনের বেসুরো হওয়া। এরপর গত সোমবার বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকের আগে দলের কঙ্কালসার অবস্থার কথা তুলে ধরে রাজ্য নেতৃত্ব সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন তিনি। সোমবার জে পি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠকে বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতিকে দলের কঙ্কালসার অবস্থার কথাও জানান। কলকাতায় ফিরে শুক্রবারও ফের তিনি একইভাবে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়ে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে সমালোচনা করেন।
[আরও পড়ুন: বড় হারে শুল্ক কমাল কেন্দ্র, একধাক্কায় অনেকটা কমছে পেট্রল-ডিজেলের দাম, স্বস্তি রান্নার গ্যাসেও]
স্বাভাবিকভাবেই রাজ্য বিজেপির সঙ্গে সাংসদের দূরত্বও তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী একটি গোপন বৈঠক করেছিলেন অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে। সূত্রের খবর, সেখানে শুভেন্দু কার্যত হাতেপায়ে ধরে অর্জুনকে বুঝিয়েছেন, দল না ছাড়ার জন্য। তারপর থেকেই দলের বিরুদ্ধেই তোপ দাগতে শুরু করেছেন বিজেপি সাংসদ। বিজেপির একটি সূত্র বলছে, ২৫ মে’র মধ্যে গেরুয়া শিবির ছাড়তে পারেন বারাকপুরের সাংসদ।