রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: নিউটাউনের (New Town)অভিজাত সাপুরজির আবাসনে দুই পাঞ্জাবি গ্যাংস্টার কীভাবে আশ্রয় নিল? কার মদতেই বা এতদিন গা ঢাকা দিয়েছিল তারা? এমনই হাজারো প্রশ্নের এখনও কোনও সঠিক জবাব মেলেনি। তবে বুধবার বিকেলে নিউটাউনের এই আবাসনে এনকাউন্টারে দুই গ্যাংস্টারের নিহত হওয়ার ঘটনার ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পেরেছেন সকলে। এই ঘটনায় বড়সড় ষড়যন্ত্রের ছায়া দেখছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ তথা যুব মোর্চা সভাপতি সৌমিত্র খাঁ (Soumitra Khan)। এর তদন্তভার NIA-কে দেওয়া হোক, এই আবেদন জানিয়ে তিনি চিঠি পাঠাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে। প্রসঙ্গত, এই মুহূর্তে সৌমিত্র খাঁ দিল্লিতে রয়েছেন। আর সেখান থেকেই তিনি এই আবেদন জানিয়েছেন বলে সূত্রের খবর।
বুধবার বিকেলে শুনশান নিউটাউন রীতিমতো কেঁপে উঠেছিল ঝাঁকে ঝাঁকে গুলিবর্ষণে। দেখা গিয়েছিল, অভিজাত ‘সুখবৃষ্টি’ আবাসনের বি ব্লকের ২০১ নং ফ্ল্যাটে গা ঢাকা দিয়ে থাকা পাঞ্জাবের দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতীর সঙ্গে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ সদস্যদের গুলিবিনিময় হয়। প্রায় ১৫ মিনিট ধরে ৪০ রাউন্ড গুলির শব্দে কার্যত কান পাতাই দায় হয়েছিল। দরজা-জানলা বন্ধ করে সকলে নিজেদের ফ্ল্যাটে বসেও আতঙ্কে কাঁপছিলেন। সবশেষে যখন গুলির শব্দ থামে, তখন শিউড়ে ওঠার মতো দৃশ্য। ফ্ল্যাটের ভিতরে দুই গ্যাংস্টারের রক্তাক্ত দেহ পড়ে রয়েছে। তাদের নাম – জশপ্রীত সিং ভুল্লার এবং জয়পাল।আন্তর্জাতিক মাদক পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত ছাড়াও এদের বিরুদ্ধে একাধিক অপরাধামূলক কাজের অভিযোগ ছিল পাঞ্জাবে। সেসব থেকে বাঁচতে বাংলায় এসে গা ঢাকা দিয়েছে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। নিউটাউন এনকাউন্টারের (Newtown Encounter) ঘটনার জাল এখন অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে, তা এতক্ষণে স্পষ্ট।
[আরও পড়ুন: নিউটাউন এনকাউন্টার: কার নামে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিল ভুল্লার? মিসিং লিংকের খোঁজে পুলিশ]
এরই মধ্যে বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ’র দাবি, নিউটাউনের যে ফ্ল্যাটে মৃত দুই গ্যাংস্টার আস্তানা গেড়েছিল, তার মালিক বাংলাদেশি। এদিন দিল্লি থেকে ‘সংবাদ প্রতিদিন’ কে সৌমিত্র জানিয়েছেন, বাংলাদেশি সূত্রের কথা তিনি নিজস্ব নেটওয়ার্ক থেকে জানতে পেরেছেন। তাই মালিকের পরিচয় সামনে আনা প্রয়োজন বলে করেন। তাই এনআইএ তদন্তের দাবি তুলছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে সেই মর্মে দাবি জানিয়েছেন সৌমিত্র খাঁ। পশ্চিমবঙ্গে ঘটে যাওয়া একাধিক অপরাধমূলক ঘটনার তদন্তে এর আগে বেশ কয়েকবার যুক্ত করা হয়েছে এনআইএ-কে। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে সেই কাজ সাফল্যের সঙ্গেই করেছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। তবে নিউটাউন এনকাউন্টার সেসবের চেয়ে অনেকটাই ভিন্ন। এর পরতে পরতে রহস্য। দায়িত্ব পেলে এনআইএ-র অনুসন্ধিৎসু চোখ কত দ্রুত সেসব রহস্যের সমাধান করতে পারে, সেটাই দেখার।