বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: সাত বিধানসভা ও একটি লোকসভা উপনির্বাচনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করল বিজেপি (BJP)। সঙ্গে সঙ্গেই কেন্দ্রীয়মন্ত্রী ও গেরুয়া শিবিরেরে সংখ্যালঘু মুখ মুখতার আব্বাস নকভির (Mukhtar Abbas Naqvi) রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে শুরু হল জল্পনা। এক পক্ষের মতে, নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাজনৈতিক জীবনে দাঁড়ি পরতে চলেছে। অন্যপক্ষের মত, নকভির জন্য আরও বড় কিছু অপেক্ষা করছে। যদিও, রাজধানীর কোনও জল্পনাই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
৭ জুলাই তাঁর রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। অথচ রাজসভা বা আজমগড় লোকসভার উপনির্বাচনে তাঁকে প্রার্থী করেনি দল। সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে ভোজপুরি অভিনেতা দীনেশলাল যাদব। এদিন কংগ্রেসও তিনটি বিধানসভা উপনির্বাচনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য সদ্য বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে আসা সুদীপ রামবর্মন রয়েছেন।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, মৃত অন্তত ৯, ভিতরে আটকে বহু শ্রমিক]
একটি জল্পনার অবসান করে আরেকটি জল্পনার জন্ম দিল বেজেপি। প্রথমে মনে করা হচ্ছিল যেহেতু কেন্দ্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকে মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভির রাজ্যসভার মেয়াদ শেষ হতে চলেছে তাই হয় তাঁকে রাজ্যসভার কোন একটি আসন থেকে অথবা অখিলেশ যাদবের ছেড়ে আসা আসন আজমগড় থেকে প্রার্থী করতে পারে পদ্মশিবির। কিন্তু আপাতত সেই জল্পনায় ইতি টানল বিজেপি। রাজ্যসভায় ১৬টি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হলেও ছিলেন না নাকভি। এবার আজমগড়েও তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি। শনিবার প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতেই নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। দিল্লিতে বিজেপির সদর কার্যালয়ে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে দু’টি মত। প্রথমত,তাহলে কি অভিজ্ঞ এই সংখ্যালঘু নেতাকে ছেঁটে ফেলার প্রক্তিয়া শুরু করল বিজেপি। তার বদলে ভবিষ্যতে অন্য কোনও সংখ্যালঘু নেতাকে সামনের সারিতে নিয়ে আসা হবে? দ্বিতীয়ত, নকভির জন্য হয়তো আরও বড়সড় চিন্তাভাবনা রয়েছে নোদি-অমিত শাহদের।
চলতি বছরেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। ২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের কথা ভেবে সেখানেও চমক দিতে চাইছে গেরুয়া শিবির। পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের কোনও মহিলাকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে চাইছে দলের একাংশ। অন্য অংশের দাবি সংখ্যালঘু মুখ। আবার ২৩ সালে উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে অবসর নেবেন বেঙ্কাইয়া নাইডু। সেখানে এবার কোনও সংখ্যলঘু মুখ সামনে আনতে পারে পদ্মশিবির বলে জোর জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি বা উপরাষ্ট্রপতির মতো কোনও দেশের সংবিধানিক পদ মুখতার আব্বাস নকভির কপালে জুটে গেলেও যেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশের কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ, মৃত অন্তত ৯, ভিতরে আটকে বহু শ্রমিক]
মুলায়মপুত্র ও উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব বিধায়ক হওয়ার পর আজমগড় লোকসভা থেকে পদত্যাগ করায় এই আসনটি ফাঁকা ছিল। রাজ্যের জাতপাতের রাজনীতিতে এই আসনটি অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য। কারণ এই আসনটি পিছিয়ে পড়া জনজাতি ও সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। রামপুর বিধানসভায় মায়াবতীর দল বহুজন সমাজবাদী পার্টি প্রার্থী না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও আজমগড়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করেছে। পিছিয়ে পড়া জনজাতি ও সংখ্যালঘু ঘোট কেটে পদ্মশিবিরকে সুবিধা করে দিয়েই মায়াবতীর এমন কৌশল বলে মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে, শনিবারই ত্রিপুরার দু’টি ও দিল্লির একটি আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। আগরতলা আসনে প্রার্থী করা হয়েছে প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও বিজেপি মন্ত্রীসভার প্রাক্তন সদস্য এবং সম্প্রতি ফের কংগ্রেসে ফেরা সুদীপ রায়বর্মনকে।