shono
Advertisement

‘অমৃতকালে বিষপান’, অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার প্রার্থী করায় ক্ষোভের আগুন বিজেপিতে

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বাংলা বিরোধী, সোশ্যাল মিডিয়ায় বলছেন দলের নেতারাই।
Posted: 12:47 PM Jul 14, 2023Updated: 12:47 PM Jul 14, 2023

রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বাংলা ভাগের ডাক দেওয়া অনন্ত মহারাজকে রাজ্যসভার (Rajya Sabha) প্রার্থী করা এখন বিজেপির জন্য শাঁখের করাতের মতো হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একে তো অনন্ত মহারাজের অতীতের জন্য বাংলা ভাগের দাবির ‘দায়’ নিতে হচ্ছে। তার উপর আবার অনন্তকে নিয়ে দলের অন্দরে চরমে উঠেছে ক্ষোভ। দলের প্রায় সব স্তরের নেতাই বলছেন, দীর্ঘদিনের বিজেপি নেতারা থাকতে বাইরে থেকে কাউকে এনে কেন প্রার্থী করা হবে।

Advertisement

রাজ‌্য বিজেপির (BJP) যে সমস্ত পুরনো নেতারা ছিলেন, রাজনীতিক হিসেবে তাঁদের কাউকেই বাংলা থেকে রাজ‌্যসভার টিকিট দেয়নি দিল্লির কেন্দ্রীয় নেতারা। রাজ‌্য বিজেপির একাধিক নেতৃত্ব প্রার্থী হবেন ভেবেছিলেন। বিশেষ করে, যাঁদের নাম জোর চর্চার মধ্যে ছিল। ফলে তাঁরা প্রকাশ্যে কিছু না বলেও ভিতরে ভিতরে ব‌্যাপক ক্ষুব্ধ। দলের সাধারণ কর্মীদের মধ্যেও বাংলা থেকে রাজ‌্যসভার প্রার্থী বাছাই নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। রাজনীতিবীদ কাউকে প্রার্থী করার বদলে আলাদা রাজ্যের দাবিতে মুখর গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ‌্যাসোসিয়েশনের নেতা অনন্ত মহারাজকে (Ananta Maharaj) কেন প্রার্থী করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বঙ্গভঙ্গের দাবি তোলা একজনকে রাজ‌্যসভায় প্রার্থী করে দেওয়ায় বঙ্গ বিজেপির বড় অংশই অসন্তুষ্ট।

[আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে হারের পরই ‘তাণ্ডব’ বিজেপির, মহিলা তৃণমূল কর্মীকে গাছে বেঁধে মার! বাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ]

দলীয় অনুশাসন মেনে অধিকাংশ নেতা প্রকাশ্যে মন্তব্য না করলেও কেউ কেউ ক্ষোভ গোপন করতে পারছেন না। উত্তরবঙ্গেরই প্রভাবশালী বিজেপি নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত যেমন অনন্ত মহারাজকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্তকে ‘অমৃতকালে বিষপানের’ সঙ্গে তুলনা করছেন। তাঁর বক্তব্য, এমন একজনকে কেন প্রার্থী করা হবে যিনি নিজের মুখে একবারও বিজেপির নামটা পর্যন্ত উচ্চারণ করছেন না। বিজেপিরই আরেক সংঘ ঘনিষ্ঠ নেতা স্বপন দাসও সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। তিনি বলছেন,”বাংলার বিজেপি নেতৃত্বকে উপেক্ষা করে, অন্য সংগঠনের অধিকারীদের আপত্তিতে কর্ণপাত না করে বাংলার বিজেপি কর্মীদের অপমান করেছে কেন্দ্র সরকার।” স্বপনবাবু বলছেন, এই প্রথম নয়। এর আগেও একাধিকবার বাংলা বিরোধী পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। উদাহরণ হিসাবে তিনি বলছেন,”বাঙালি বিরোধী বিজেপির হিন্দিভাষী নেতারা বাঙালিদের ঘৃণা করেন। সেকারণেই ১৮ জন সাংসদ জেতার পরও একজন বাঙালিকে পূর্ণমন্ত্রী করা হয়নি। জাতপাতের ভিত্তিতে কার কত প্রভাব সেটাই এখন বিজেপিতে যোগ্যতার মাপকাঠি। “

[আরও পড়ুন: মুর্শিদাবাদে ভোট হিংসার বলি আরও ১, হাসপাতালে ৭ দিন লড়াইয়ের পর মৃত্যু তৃণমূল কর্মীর]

দলের একাংশের মতে, উত্তরবঙ্গে নজর দিতে গিয়ে দক্ষিণবঙ্গে সংগঠন ধ্বংস করে ফেলছে বিজেপি। আবার রাজ‌্য নেতাদের কারও কারও কথায়, উত্তরবঙ্গেও কতটা লাভ হবে তা নিয়েও সন্দেহ রয়েছে। বাংলা থেকে রাজ‌্যসভার প্রার্থী হিসেবে তালিকায় সম্ভাব‌্য না ছিল মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty), স্বপন দাশগুপ্ত, অনির্বাণ গঙ্গোপাধ‌্যায়দের। দলীয় সূত্রে খবর, মিঠুন চক্রবর্তীরও চেয়েছিলেন রাজ‌্যসভায় যেতে। প্রার্থী না হতে পেরে ক্ষুব্ধ মিঠুন ঘনিষ্ঠ মহলে হতাশা প্রকাশ করছেন। তালিকায় নাম থাকা বাকিরাও হতাশ। দলের একাংশর দাবি ছিল, দীর্ঘদিন পার্টি করে আসা প্রাক্তন বিধায়ক বর্তমানে রাজ‌্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে রাজ‌্যসভায় পাঠানো হোক। ফলে দলের পুরনো নেতা-কর্মীরাও ক্ষুব্ধ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement