রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কলকাতা পুরভোটের দিন গোলমালের অভিযোগ উঠলে বিজেপি রাজ্যজুড়ে পথে নামবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সেই পরিকল্পনা মতো কলকাতা সংলগ্ন এলাকাতেই থাকবেন দলের বিধায়করা। শুভেন্দুও থাকছেন কলকাতা পুর এলাকার বাইরে শহরের লাগোয়া কোনও এলাকায়। সল্টলেক ও হাওড়ার কোনও একটি সেন্টারে বিধায়করা উপস্থিত থাকবেন। ভোট নিয়ে গন্ডগোলের অভিযোগ উঠলেই বিধায়কদের নিয়ে শহরের রাস্তায় নামবেন শুভেন্দু অধিকারী। নির্বাচন কমিশনরে দপ্তরও অভিযান হবে। পুলিশ বাধা দিলে পথে বসে পড়বেন বিজেপি বিধায়করা।
পাশাপাশি দলের রাজ্য দপ্তর মুরলি ধর সেন লেনে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। সেখানে থাকবেন রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালরা। প্রতাপবাবু ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। আর অগ্নিমিত্রা ৫৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার। রাজ্য অফিসে থাকবেন দলের তরফে কলকাতা পুরভোটের দায়িত্বে থাকা দুই সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো এবং অর্জুন সিং। সেখানেই থাকছেন রাজ্য নেতা অমিতাভ চক্রবর্তী, শমীক ভট্টাচার্য, শিশির বাজোরিয়া প্রমুখ। দলের আইনজীবী টিমকেও প্রস্তুত রাখা হবে।
[আরও পড়ুন: নবান্নের কাছে উলটে গেল ছাইবোঝাই কন্টেনার, চাপা পড়ে মৃত্যু পথচারীর]
দলের রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার কলকাতায় নেই। দলীয় সূত্রে খবর, সুকান্তবাবুর মেয়ে অসুস্থ। তাই তিনি বালুরঘাটেই রয়েছেন। দলের সমস্ত কাজকর্ম বুঝিয়ে দিয়ে তিনি বালুরঘাটে গিয়েছেন। কলকাতার পরিস্থিতির খোঁজখবরও নিচ্ছেন ঘণ্টায় ঘণ্টায়। তাই ভোটে গন্ডগোলের প্রতিবাদে রাজ্যজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি হলে বালুরঘাটেই সেই কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। এছাড়া, দলের সর্বভারতীয় সহ—সভাপতি দিলীপ ঘোষ জানিয়েছেন তিনি দিল্লিতেই থাকছেন। সেখান থেকেই ভোটের খোঁজখবর নেবেন। কেন্দ্রীয়ভাবে রাজ্য দপ্তরে যেমন কন্ট্রোল রুম থাকছে। যেখানে সমস্ত খবর আসবে। কোনও গন্ডগোলের খবর এলে সেখান থেকেই রাজ্য নেতৃত্ব নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাবেন।
এছাড়াও, ওয়ার্ডভিত্তিক কন্ট্রোল রুমও হচ্ছে। সেখানে প্রার্থী ও এজেন্টরা কোনও সমস্যা হলে কমিশনের কাছে এবং তার পাশাপাশি রাজ্য নেতৃত্বকে অভিযোগ জানাবেন। সূত্রের খবর, বিভিন্ন বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা ঠিক আছে কী না সেটা আগাম দেখে নিতে বলা হয়েছে এজেন্টদের। ভোর পাঁচটায় রাজ্য দপ্তর থেকে এজেন্টদের ফোন করে ঘুম থেকে তুলে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া, কলকাতার দলীয় কর্মীদেরও প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। কোনও গন্ডগোল হলেই মুরলি ধর সেন লেন থেকে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরের উদ্দেশে মিছিল বের হবে। পুলিশ পথ আটকালে কলকাতাতেই পথ অবরোধ করবে বিজেপি কর্মী—সমর্থকরা এমনই পরিকল্পনা করে রেখেছে গেরুয়া শিবির।
[আরও পড়ুন: ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইন আনুক কেন্দ্র, দাবি জানিয়ে দেশব্যাপী কর্মসূচি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের]
রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য শনিবার জানান, ভোটে অশান্তি হলেই বিজেপি কর্মীরা নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাও করবে। পথে যেখানেই আটকানো হবে সেখানেই অবরোধ শুরু হয়ে যাবে। বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অগ্নিমিত্রা পালকে। কারণ তিনি আসানসোলের বিধায়ক হলেও কলকাতার ভোটার। শমীকের হুঁশিয়ারি, কেউ সন্ত্রাস করলে তাদের চিহ্নিত করে সিটের কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। যেরকম বিধানসভা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীদের বাড়িতে সিবিআই পৌঁছে গিয়েছিল। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কলকাতার ভোটার নন। তাহলে তিনি কি শহরে থাকবেন? শমীকের উত্তর, “দেখতেই পাবেন।”