ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) ছাত্রমৃত্যুর রেশ আছড়ে পড়ল বিধানসভায়। মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদের প্রতীক হিসেবে কালো কাপড় পরে বিধানসভায় (Assembly) এলেন বিজেপি বিধায়করা। বিজেপির মুলতুবি প্রস্তাব আনে। অধিবেশনে এই প্রসঙ্গ উঠতেই শাসক-বিরোধীদের মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হতেই বিজেপি ওয়াকআউট করে। ফলে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় বিধানসভায়।
ছাত্রমৃত্যু ইস্যুতে বিধানসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনে বিজেপি (BJP)। রাজ্য কী ব্যবস্থা নিয়েছে, তা জানতে চান বিজেপি বিধায়করা। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, ”বিধায়ক ও ছাত্র প্রতিনিধিদের ৫ জন ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে গিয়ে কথা বলেছি। সমবেদনা জানিয়েছি। কিন্তু যে ক্ষতি তাকে তো ফিরিয়ে দিতে পারব না। আমরা কী ব্যবস্থা নিচ্ছি, জানতে চাইছেন। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)২০০৯ সালে যে রায় দিয়েছে, তার আগে ২০০২ সালে হিমাচলের একটি ডাক্তারি ছেলেকে র্যাগিং করতে গিয়ে মেরে ফেলা হয়। রঘবন কমিটি তৈরি হয়। সারা দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুপারিশ করে। তারপর আমাদের রাজ্যে ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে সেই নির্দেশিকা পাঠাই। ২০২৩ সালেও পাঠাই। কিন্তু সেই নির্দেশিকার পরও দেশের নানা জায়গায় এই র্যাগিংয়ের ঘটনা অব্যাহত থেকেছে।” শুভেন্দুকে লক্ষ্য করে ব্রাত্য বসু আরও বলেন, ”আপনি যাদবপুরের কথা বললে আমিও খড়গপুরের কথা বলব। আপনি ভাগাভাগি করছেন। রাজনীতি করছে। আমি দুটো জায়গাতেই র্যাগিং হয়েছে বলছি।”
[আরও পড়ুন: জাতীয় সংগীতের মতো রাজ্যের জন্য তৈরি হোক ‘রাজ্য সংগীত’, প্রস্তাব স্পিকারের]
রাজ্যপাল যাদবপুরে নতুন উপাচার্য (VC) নিয়োগ করেছেন, সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন ব্রাত্য বসু। তাঁর আরও অভিযোগ, এর জন্য ১০০ শতাংশ দায়ী রাজ্যপাল। এরপর বিজেপি বিধায়করা চিৎকার শুরু করেন। শুভেন্দু অধিকারী বলতে শুরু করেন, ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় রাজ্য স্তম্ভিত। মাদক পাচার চক্রের অবাধ বিচরণ ছিল বলে অভিযোগ। ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থানা। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। র্যাগিং করেছে। সিনিয়ররা হস্টেল দখল করে রাখত। সমগ্র শিক্ষা ব্যবস্থার জন্য হৃদয়বিদারক। এটা নতুন নয়। ওখানে এক ধরনের উগ্র বাম মানসিকতার সংগঠনের ছাত্র আছে যারা দেশবিরোধী কথা বলে মাঝেমাঝে। যাদবপুরের ক্ষেত্রে ইউজিসি নিয়ম দীর্ঘদিন মানা হয়নি। যাদবপুর নিয়ে কিছু নির্দেশিকা দিয়েছিল। সিসিটিভি স্থাপন আর পুলিশ কিয়স্ক। প্রধান বিচারপতির নির্দেশ মান্যতা দেওয়া হয়নি। তাহলে ১৭ বছরের ছেলেটির প্রাণ যেত না।
[আরও পড়ুন: পরকীয়া করছেন মা! ফোনে টেক্সট করতে দেখেই কুপিয়ে ‘খুন’ নাবালক ছেলের]
শুভেন্দু আরও প্রশ্ন তোলেন, এই যে আখড়া হয়েছে, সেটা উপড়ে ফেলার জন্য সরকার কী ভাবছে? আর কী কী ব্যবস্থার কথা ভাবছে? যাতে আগামীদিনে গ্রাম থেকে আসা ছেলেরা সুস্থ থাকবে, সরকার তার গ্যারান্টি নেবে? যাদবপুরের প্রাক্তন উপাচার্য, যিনি সিসিটিভি বসানোর জন্য সওয়াল করেছিলেন, তাঁকে অপসারণের জন্য তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী, জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দায়ী করেছেন বিরোধী দলনেতা। এই সংক্রান্ত প্রশ্ন অবশ্য বাদ দিতে বলেন অধ্যক্ষ।