রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কলকাতা পুরভোটে ১৪৪ ওয়ার্ডে প্রার্থী হতে চেয়ে এখনই পাঁচশোর উপর আবেদন জমা পড়েছে। সূত্রের খবর, সেই আবেদনে নতুন মুখ যেমন রয়েছে, তেমনই দলের পুরনোরাও রয়েছেন। পাশাপাশি হাওড়াতেও ৫০টি ওয়ার্ডের জন্য জমা পড়েছে দু’শোর বেশি আবেদনপত্র। এছাড়া, সরাসরি রাজ্য দপ্তরের ড্রপ বক্সেও জমা পড়েছে একশোর বেশি বায়োডাটা।
উপর থেকে চাপিয়ে দেওয়া নয়। কলকাতা পুরভোটে প্রার্থী বাছাইয়ে জেলার মতামতকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেবে গেরুয়া শিবির (BJP)। লড়াই করতে পারবেন এরকম যোগ্য প্রার্থী কারা হতে পারেন তার তালিকা জেলা থেকে এলে চূড়ান্ত করবে রাজ্য কমিটি। দলীয় সূত্রে খবর, ভোটে জেতার পর দলবদল করতে পারেন এরকম সন্দেহ থাকলে তাঁদের প্রার্থী করা হবে না। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে এ বিষয়ে সতর্কও করে দেওয়া হয়েছে রাজ্য নেতাদের। পরে কোনওভাবেই যেন মুখ না পোড়ে দলের। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, মণ্ডল থেকে জেলা কমিটির কাছে যে নাম পাঠাবে সেই নামই এবার রাজ্য চূড়ান্ত করবে। কোনও সুপারিশ থাকলেও যোগ্য যাঁরা হবেন তাঁদের নামই চূড়ান্ত করবে রাজ্য নেতৃত্ব।
[আরও পড়ুন: ‘অন্যের রান্নাঘরে যৌন মিলন করেছিলাম’, নুসরতের শোয়ে গোপন কথা ফাঁস ঋতাভরীর]
গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে চূড়ান্ত অসন্তোষ ছিল দলের মধ্যে। ভোটে বিপর্যয়ের পর সেই অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। পরাজয়ের জন্য ভুল প্রার্থী নির্বাচনকেও দায়ী করে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলেছিল পদ্মশিবিরের একাংশ। আবার সেলিব্রিটিদের প্রার্থী করা নিয়েও প্রকাশ্যে তোপ দেগেছিলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায়। অভিযোগ উঠেছিল, প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে জেলা কমিটির মতামতকে যেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আবার দাবিদার হওয়া সত্ত্বেও দলের পুরনো নেতাদের বঞ্চিত রাখা হয়েছিল।
আগামী মাসেই হতে চলেছে হাওড়া (Howrah) ও কলকাতার পুরভোট। বর্তমানে আদি-নব্য দ্বন্দ্বে জর্জরিত বঙ্গ বিজেপি। দলের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। গেরুয়া শিবির ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়াদের তালিকাও ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সামনে হাওড়া ও কলকাতা এই দুই পুরসভার ভোটযুদ্ধ এখন দলের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। তার উপর আবার কলকাতা পুরভোটের কমিটি নিয়েও অসন্তোষ চরমে। কমিটির মাথায় একটা বড় অংশই দলে নতুন। অনেকে আবার কলকাতার লোকই নন। কাজেই কমিটির বৈঠকেও যেতে পুরনো অনেক নেতারই তেমন আগ্রহ নেই। কমিটিতে রাখা সত্ত্বেও নিষ্ক্রিয় রয়েছেন অনেকে। এমনটাই বক্তব্য নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রাজ্য নেতার।
কলকাতা পুরসভার (Kolkata Municipal Corporation) ১৪৪টি ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম হিসাবে ৫০০টির বেশি বায়োডেটা জেলা কমিটিগুলির কাছে এখনও পর্যন্ত জমা পড়েছে বলে খবর। অন্যদিকে, হাওড়া পুরনির্বাচন পরিচালন কমিটির আহ্বায়ক উমেশ রাই জানিয়েছেন, হাওড়া পুরসভার ৫০টি ওয়ার্ডের জন্য দু’শোর কিছু বেশি বায়োডাটা জমা পড়েছে। কলকাতা ও হাওড়ার ক্ষেত্রে আরও কিছু বায়োডাটা ড্রপ বক্স থেকে নেওয়া হবে। সব আবেদন একত্র করে সেখান থেকে স্ক্রিনিং করবে রাজ্য নেতৃত্ব। আর এই স্ক্রিনিংয়ের পরই জেলা নেতাদের সঙ্গে একমত হয়ে তবেই প্রার্থীদের নাম চূড়ান্ত করা হবে।