রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিভিন্ন জেলায় কংগ্রেস ও বামেদের সঙ্গে জোট করে দলীয় প্রার্থীদের প্রচার শুরু হলেও নিজেদের তৃণমূলের প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরল রাজ্য বিজেপি। পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে দলের ইস্তেহার প্রকাশ করে মঙ্গলবার রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, রাজ্যে তৃণমূলের বিকল্প বিজেপিই। সিপিএমকে যে তাঁরা গুরুত্ব দিচ্ছেন না এমনটাই স্পষ্ট করে দেন বালুরঘাটের সাংসদ।
পাটনার বৈঠকের উদাহরণ টেনে তাঁর বক্তব্য, ওই বৈঠকের ছবি দেখার পরই অনেক সিপিএম কর্মী বসে গিয়েছেন। তাঁরা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। একইসঙ্গে সুকান্তর দাবি, এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভাল ফল করবে বিজেপি। তবে কত জেলা পরিষদ আসন পদ্মশিবিরের দখলে আসতে পারে সেই প্রশ্নে তাঁর জবাব, “আমি জ্যোতিষি নই, তবে ভাল ফল হবে।” এদিন বিজেপির পঞ্চায়েত নির্বাচনের সংকল্পপত্রে স্বচ্ছতার সঙ্গে পঞ্চায়েত গঠন, কৃষকদের উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি, নারীকল্যাণ, শিশু-যুবকদের সুরক্ষা, গ্রামীণ পরিকাঠামো, আইনশৃঙ্খলা প্রমুখ বিষয়কে রাখা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: বাঁ পায়ের লিগামেন্টে চোট, হাসপাতালে ভরতি হতে নারাজ মমতা, বাড়িতেই চলবে চিকিৎসা]
‘চোরমুক্ত’ পঞ্চায়েত গড়ার যে স্লোগান বিজেপি দিয়েছে, তা নিয়ে পালটা তোপ দেগেছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। কুণাল বলেন, ‘‘দুনিয়ার যত চোর, ডাকাত, তোলাবাজ তো বিজেপিতেই। মানুষের যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তৃণমূল তাদের সরিয়ে নতুন মুখ দিয়েছে। আর বিজেপিই তো ভিডিও দেখিয়ে বলেছিল শুভেন্দু চোর, সিবিআই চাই। সিবিআই এফআইআর করেছে। চোর শুভেন্দুকে পাশে বসিয়ে আপনারা (বিজেপি) চোর মুক্তির কথা বলছেন?’’
মঙ্গলবার সল্টলেকে দলীয় কার্যালয়ে বিজেপির পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election 2023) সংকল্প পত্র বা ইস্তেহার প্রকাশ অনুষ্ঠানে ছিলেন চার শীর্ষ নেতা রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। তাৎপর্যপূর্ণ এটাই, দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে ঐক্যের বার্তা দিতেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে সুকান্ত-দিলীপ-শুভেন্দুকে একই মঞ্চে রেখে সাংবাদিক সম্মেলন করানো হয়। কিন্তু রাজনৈতিক মহল ও দলের একাংশ মনে করছে, এই ঐক্যের ছবি দেখানোর চেষ্টা হলেও তিন নেতার মধ্যে দূরত্বের বিষয়টি চোখ এড়ায়নি। যেমন, সাংবাদিক সম্মেলন শুরুর কিছুটা আগেই মঞ্চে শুভেন্দু আর দিলীপ ঘোষ উপস্থিত হন। দু’জনের মধ্যে কোনও কথা হয়নি। আবার নিজের বক্তব্য রাখার পর সুকান্তর প্রেস মিট শেষের আগেই বেরিয়ে যান শুভেন্দু। বিজেপির মধ্যে বিভাজন বা দন্দ্ব চলছেই।