সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একসময়ের একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে দলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিলেন। সরকার গড়তে এবার তাঁরই শরণাপন্ন হরিয়ানার বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খাট্টার। জেজেপি প্রধান দুষ্মন্ত চৌটালা বিজেপিকে সমর্থন দিয়ে দেওয়ার পরও সরকার গঠনে প্রয়োজনীয় সংখ্যা নিয়ে চিন্তিত দল। এই পরিস্থিতিতে নির্দল হিসেবে সিরসা থেকে জয়ী গোপাল কান্ডার দ্বারস্থ হতেই হয়েছে খাট্টারদের। আর তাতেই তৈরি হয়েছে নতুন বিতর্ক।
বছর সাত আগেকার কথা। গীতিকা শর্মা নামে এক বিমানসেবিকা গোপাল কান্ডার নিজস্ব উড়ান সংস্থায় চাকরি নেন। অভিযোগ, তারপর থেকেই গীতিকার উপর শারীরিক নিগ্রহ এমনই বাড়তে থাকে যে তা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথে হাঁটেন তিনি। মেয়েকে হারিয়ে শোকে বিহ্বল মা-ও পরে আত্মঘাতী হন। সেই গুরতর অভিযোগে বিচারব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হয়েছিল গোপাল কান্ডাকে। ২০১২ সালে তিনি বেশ কিছুদিন জেলেও ছিলেন। এছাড়া হরিয়ানার মতো রাজ্যে জমি কেলেঙ্কারি, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তো ছিলই তাঁর বিরুদ্ধে।
[আরও পড়ুন: শিশুদের জঙ্গি বানাতে কাশ্মীরে সমান্তরাল শিক্ষা ব্যবস্থা গড়তে চায় পাকিস্তান]
এহেন ব্যক্তির হাত ধরেই ২০০৯ সালে সরকার গড়েছিলেন কংগ্রেসের ভূপিন্দর সিং হুডা। গোপাল কান্দা তাঁর ক্যাবিনেটের মন্ত্রীও ছিলেন। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার হুডা নিজেই তাঁকে মন্ত্রিসভা এবং দল থেকে বের করে দিয়ে স্বস্তি পান। বিজেপিও সেসময় কান্ডা-বিরোধী প্রতিবাদে শামিল হয়।
রাজনীতির হাওয়া ঘুরে যাওয়ায় এখন সেই গোপাল কান্ডা কংগ্রেস বিরোধী হয়ে নিজের দল গড়েছেন। লোকহিত পার্টির সুপ্রিমো নিজে এবারের বিধানসভায় সিরসা থেকে জয়ী হয়েছেন। আর সরকার গড়তে এবার তাঁর সমর্থনই পেতে চাইছেন মনোহরলাল খাট্টার। একসময় যাঁর বিরুদ্ধে এত প্রতিবাদ, শোরগোল, ক্ষমতা ফিরে পেতে আজ তাঁরই দ্বারস্থ বিজেপি। আর এখানেই প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে হরিয়ানার গেরুয়া শিবির।
গীতিকার ভাই অঙ্কিত শর্মা স্পষ্ট প্রশ্ন তুলেছেন, ‘অপরাধীদের সমর্থন নিয়ে কি তৈরি হচ্ছে আমাদের সরকার? আমি এর জন্যেই নিজের বোন, মা-কে হারিয়েছি। আজও সেই কষ্ট পেতে হচ্ছে। কোন ধরনের রাজ্যে বাস করছি আমরা, যে সরকার তৈরির জন্য দুষ্কৃতীদের ডাকছি?’ তিনি আরও বলেন, ‘বেটি বাচাও বেটি পড়াও-এর মতো প্রকল্পের প্রতিফলন হরিয়ানায় কীভাবে হবে? যদি একজন মহিলাদের খুনীকেই আমরা সরকারে রাখি?’ কংগ্রেসের তরফে বিজেপির এই পদক্ষেপের ঘোরতর নিন্দা করা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘ক্ষমতার অহংকার’, নাম না করে ফড়ণবিসকে কটাক্ষ শিব সেনার]
সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব এই মর্মে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহকে চিঠিও লিখেছেন। তিনি বলেন, ‘গোপাল কান্ডা ধর্ষণ, আত্মহত্যায় প্ররোচনা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মতো ভয়ঙ্কর বিষয়ের সঙ্গে জড়িত। আর বিজেপি তার সমর্থন নিয়ে সরকার গড়ে মহিলাদের সুরক্ষাকে আরও প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।’ সবমিলিয়ে, গোপাল কান্ডা এখন যতই হরিয়ানার ভাবী সরকারের কিংমেকার হন, বিতর্ক বাড়ছেই।
The post ধর্ষণে অভিযুক্ত বিধায়ক গোপাল কান্ডার শরণাপন্ন, হরিয়ানায় বিতর্কে বিজেপি appeared first on Sangbad Pratidin.