স্টাফ রিপোর্টার: বিলাসবহুল রিসর্ট বৈদিক ভিলেজে বঙ্গ বিজেপির ‘প্রশিক্ষণ শিবির’ নিয়ে সরগরম গেরুয়া শিবির। রাজ্য প্রশিক্ষণ শিবির কেন ‘সেভেন স্টার’ হোটেলে করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলের অন্দরেই সরব হলেন রাজ্য বিজেপির আদি নেতারা। বিলাসবহুল রিসর্টে প্রশিক্ষণ শিবির বাতিল করে অন্য কোথাও করা হোক। তা না হলে জনমানসে দলের ভাবমূর্তি ধাক্কা খাবে, এই মর্মে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে (JP Nadda) ই-মেল করে চিঠি পাঠাল বিজেপি বাঁচাও মঞ্চ।
বিলাসবহুল রিসর্টে প্রশিক্ষণ শিবির নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও সমালোচনার ঝড়ে বিদ্ধ বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির। ‘সেভ বেঙ্গল বিজেপি’র তরফেও সমালোচনা করে টুইট করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “ভোট পরবর্তী অশান্তির ঘটনায় আক্রান্ত বিজেপি (BJP) কর্মীরা উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পাচ্ছেন না। অন্যদিকে দলের কিছু জেলা সভাপতি মাসিক ১৭ হাজার টাকা পাচ্ছেন। এরই মধ্যে বৈদিক ভিলেজ রিসর্টে দু-রাত্রি তিনদিনের প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। লজ্জাজনক।” বিলাসবহুল রিসর্টে দলীয় কর্মসূচি নিয়ে সমালোচনার তিরে বিদ্ধ অমিত মালব্য থেকে অমিতাভ চক্রবর্তীরা। এই প্রশিক্ষণ শিবির প্রসঙ্গে দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “প্রশিক্ষণ যখন কোথাও হয়, বাইরেই কোথাও হয়। বিলাসবহুল কতটা আমার জানা নেই। আমি কখনও যাইনি। থাকার জায়গার সুবিধা থাকবে এরকম জায়গাতেই হবে।” রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) কটাক্ষ, “বৈদিক ভিলেজে বিলাসবহুল জায়গায় বিজেপি প্রশিক্ষণ শিবির করবে। ওরা সাধারণ মানুষের পাশে নেই। বিলাসবহুল জায়গায় থাকতেই অভ্যস্ত।”
[আরও পড়ুন: গা ঢাকা দিয়েও শেক্ষরক্ষা হল না, অবশেষে সিবিআইয়ের হাতে আটক অনুব্রত ও সুকন্যা ঘনিষ্ঠ বিদ্যুৎবরণ]
এদিকে, বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের তরফে শামসুর রহমান মঙ্গলবার সকালে জেপি নাড্ডাকে ই-মেল করে বৈদিক ভিলেজে (Vedic Village) প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের সদস্যদের বক্তব্য, “প্রশিক্ষণ শিবির তো অন্যত্র করা যেতে পারত। এত খরচ করে শিবির আর ‘পিকনিক’ সাধারণ বিজেপি কর্মীরা ভালভাবে নিচ্ছে না। এটা বিজেপির আদর্শের সঙ্গে মেলে না। মানুষ ঘৃণার চোখে দেখবে। বিজেপি শীর্ষনেতারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে পাত পেড়ে খান। আর সেই দলের প্রশিক্ষণ শিবির সেভেন স্টার রিসর্টে। রাজ্য কমিটির কিছু নেতা দলের ইমেজকে এভাবে নষ্ট করতে চাইছে।” প্রায় দু’কোটি টাকা খরচ করে ২৯ থেকে ৩১ আগস্ট রাজ্য বিজেপির তিনদিনের ‘প্রশিক্ষণ শিবির’ বসছে পূর্ব ভারতের অন্যতম বিলাসবহুল রিসর্ট বৈদিক ভিলেজে। এই ‘পিকনিকের’ জন্য যে বিপুল অর্থ খরচ হবে তা কি বিজেপির কেন্দ্রীয় পার্টির তরফে দেওয়া হবে? এই প্রশ্ন গেরুয়া শিবিরের একাংশের।
নবান্ন অভিযানে জমায়েত নিয়ে আশঙ্কায় জেলা নেতারা। রাজ্যের তরফে যে টার্গেট দেওয়া হয়েছে ভাঙা সংগঠন নিয়ে তা পূরণ করা যে সম্ভব নয় সেটা দলের অন্দরে জানিয়েও দিয়েছেন একাধিক জেলা নেতৃত্ব। দলের একাংশের বক্তব্য, নবান্ন অভিযানের মতো বড় কর্মসূচির দায়িত্ব এবার যাঁদের উপর দেওয়া হয়েছে তাঁদের বড় মিছিল সফল করার কোনও পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। দলের একাংশের দাবি, যাঁদের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁদেরকেই আজ দূরে সরিয়ে রাখা হয়েছে। রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা না থাকা রাজ্য নেতাদের কয়েকজন নবান্ন অভিযানে জমায়েতের যে টার্গেট দিচ্ছেন তা অবাস্তব।