রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: জয়ের আশা দেখছে না কিন্তু কোনওভাবেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হওয়ার জায়গা থেকে তারা সরে আসবে না। কলকাতা পুরভোটে এমন লক্ষ্য নিয়েই এগোচ্ছে বিজেপি। সিপিএম যাতে কোনওভাবেই কলকাতায় তৃণমূলের (TMC) প্রধান বিরোধী না হয়ে ওঠে সেদিকে নজর দিয়েই সংগঠনকে শক্তিশালী করে রণকৌশল সাজাতে হবে।
দলীয় সূত্রে খবর, কলকাতা জোনের নেতাদের নিয়ে পুরসভার নির্বাচন নিয়ে অভ্যন্তরীণ বৈঠকে ছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary), সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি নেতৃত্বের মতে, ২০১৫ সালে কলকাতা পুরভোটে সিপিএম প্রধান বিরোধী দল হয়েছিল। এখন বিজেপি রাজ্যে প্রধান বিরোধী। এবার কলকাতা পুরভোটেও অন্তত প্রধান বিরোধী দল হতে হবে বিজেপিকে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, কলকাতায় গেরুয়া সংগঠন সে রকম শক্তিশালী নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনেও কলকাতার সমস্ত বিধানসভা কেন্দ্রেই বিপুল ভোটে হারতে হয়েছে বিজেপি প্রার্থীদের। দলের এক শীর্ষ নেতার কথায়, কলকাতায় শাসক দলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো সংগঠন নেই বিজেপির। তাই লড়াই করে অন্তত প্রধান বিরোধী দলের তকমাটা থাকলেও কর্মীদের মনোবলটা অনেকটা ধরে রাখা যাবে।
[আরও পড়ুন: এই না হলে ভাগ্য! স্বামীর দোকান থেকে লটারি কিনে রাতারাতি কোটিপতি মালবাজারের বধূ]
এদিকে, কলকাতা পুরসভার ভোট পরিচালনার জন্যও চারটি জোনের জন্য চারটি কমিটি তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। যে কমিটিগুলির দায়িত্বে কল্যাণ চৌবে, প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল, তুষারকান্তি ঘোষরা রয়েছেন। সূত্রের খবর, কমিটির কো-চেয়ারম্যান অমিতাভ রায় শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন, দলে পরে আসা কারও অধীনে তিনি কো-চেয়ারম্যান থাকবেন না। তবে ভোটের দায়িত্ব বা কাজ যা দেওয়া হবে সেটা করবেন। এদিকে, রাজ্য সরকারের পুর দপ্তরের প্রস্তাব মেনে কলকাতা ও হাওড়ায় আগামী ১৯ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ হবে। এরই মধ্যে হাওড়া থেকে বালি পুরসভাকে ফের আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভায়।
আর এই পুরভোট নিয়ে বিজেপির অন্দরেই ভিন্নমত উঠে এসেছে দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ও সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্যে। সব পুরসভার ভোট একসঙ্গে করতে হবে, এই দাবিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে গেরুয়া শিবির। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, “নোটিফিকেশন অনুযায়ী হাওড়াতে ১৯ ডিসেম্বর ভোট করাতে চায় সরকার। আমি পরিষ্কার বলছি, তা পারবে না। কলকাতার কী হবে পরে দেখছি।” দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের অবশ্য বক্তব্য, কলকাতা ও হাওড়ার ভোটে পুরো শক্তি দিয়েই লড়বে দল। ভোট একসঙ্গে হোক বা আলাদা হোক। আর বালিকে আলাদা করার সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক স্বার্থেই। এ বিষয়ে বিজেপিকে তোপ দেগেছে তৃণমূলও। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “প্রশাসন যদি মনে করে উন্নয়নের স্বার্থে বালির নিজস্ব পুরসভা হবে তাহলে বিজেপির কী অসুবিধা। এটা প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত। আর বিজেপিকে (BJP) তো দলবদলু বিধায়কদের নিয়েও হারতে হয়।”