বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: দক্ষিণ ভারতে বিজেপির (BJP) সংগঠন নিয়ে যে প্রচার চলছে তাকে মিথ্যা প্রমাণ করার দায়িত্ব রাজ্য নেতৃত্বের। লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণের পাঁচ রাজ্য থেকে কমপক্ষে ১০০টি আসন প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দিতে হবে। রবিবার হায়দরাবাদে ১১ রাজ্যের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে টার্গেট বেঁধে দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (J P Nadda)। সবদিক বিবেচনা করেই সংগঠনে কিছু রদবদল করা হচ্ছে। কারণ নরেন্দ্র মোদি সরকার ব্যক্তি বা দলের জন্য নয়। দেশের মানুষের জন্য কাজ করে চলেছে। তাই দেশের স্বার্থের কথা ভেবে লোকসভা নির্বাচনের জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি শুরু করতে হবে বলে বৈঠকে হাজির ১১ রাজ্যের রাজ্য সভাপতি, সাংসদ ও সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা নেতৃত্বকে নির্দেশ দেন নাড্ডা। এছাড়াও বৈঠকে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) বিএল সন্তোষ ও সুনীল বনশল।
পরপর দু’টি রাজ্যে বিপর্যয়। দু’টি রাজ্যে বিপর্যয়ের পর্যালোচনা করতে গিয়ে গেরুয়া শিবিরের শীর্ষনেতৃত্বের কাছে বিস্ফোরক সব তথ্য উঠে আসে। তাতে স্পষ্ট হয় দেশজুড়েই মোদি বিরোধী হাওয়া প্রবল হয়েছে। হিন্দুত্বের প্রচার আর মোদির মুখ দেখিয়ে ভোটে গেলে লোকসভাতেও বিপর্যয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। তার ওপর বিরোধীদের জোট বাধার প্রক্তিয়া শুরু হওয়ায় ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছে গেরুয়া শিবির। তাই তড়িঘড়ি দেশজুড়ে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করে পরিস্থিতি বোঝার সিদ্ধান্ত নেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা ও বিএল সন্তোষরা।
[আরও পড়ুন: ভোটের দিন থেকে শিক্ষা, হিংসা রুখতে পুনর্নির্বাচনে বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ৪ জওয়ান]
প্রথমে উত্তর পূর্ব ভারতের সাত রাজ্য-সহ বাংলা, বিহার, ঝাড়খন্ড ও ওড়িশার নেতৃত্বের সঙ্গে গুয়াহাটিতে বৈঠক হয়। তারপর গো বলয়ের রাজ্যগুলেকে নিয়ে দিল্লিতে ও রবিবার বাকি ১১টি রাজ্যের সঙ্গে হায়দরাবাদে বৈঠকে বসেন বিজেপির শীর্ষনেতৃত্ব। বৈঠকে লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতির সঙ্গে চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের রণকৌশল নিয়ে আলোচনা হয় বলে বিজেপির তরফে জানান হয়েছে।
শনিবার তেলেঙ্গানা সফর করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের দল টিআরএস ও কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেন প্রধানমন্ত্রী। দু’টি দলেই পরিবারতন্ত্র চলছে। সেইসঙ্গে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলে আক্রমণ শানান। পরদিনই সেই তেলেঙ্গানার রাজধানীতে জেপি নাড্ডাদের বৈঠকের পিছনে বেশকিছু কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাঁদের মতে, কর্ণাটকে বিপর্যয়ের পর গোটা দক্ষিণ ভারত থেকে কার্যত ধুয়ে মুছে গিয়েছে গেরুয়া শিবির। এবার তেলেঙ্গানার ভোটে বিপর্যয় হলে তার প্রভাব লোকসভার ভোটবাক্সে পরবে। সেইসঙ্গে আতও যে তিনটি রাজ্যে ভোট রয়েছে সেখানেও ‘ব্যাকফুট’-এ রয়েছে পদ্মপক্ষ। তাই ভোটের এতো আগে থেকে প্রস্তুতি। সেই প্রসঙ্গই এদিন ঘুরে ফিরে আসে নাড্ডার বক্তব্যে। জানা গিয়েছে তিনি জোর দেন দক্ষিণ ভারতের রাজ্যগুলিতে বুথস্তরে সংগঠন মজবুত করার ওপর। বুথ ধরে ধরে মানুষের কাছে মোদি সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন।