স্টাফ রিপোর্টার: আসানসোল ও বনগাঁ পুরসভার মোট দু’টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনেও ধরাশায়ী বিজেপি। আসানসোলে আবার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে বামেদেরও পরে তৃতীয় স্থানে পদ্মশিবির। আর এই দুই পুরসভার দু’টি ওয়ার্ডে পর্যদুস্ত হওয়ার পর দোষারোপের পালা শুরু হয়ে গিয়েছে দলের মধ্যে। রাজ্যের পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য ও সংগঠন সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীকেও কাঠগড়ায় তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব দলের একাংশ।
বিক্ষুব্ধ শিবিরের প্রশ্ন, প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া ও একাধিক ইস্যু নিয়ে হওয়া গরম করার পরও ভোটবাক্সে কেন তার কোনও প্রভাবই ফেলতে পারল না বঙ্গ বিজেপি (BJP)? বুধবার ভোটের ফল প্রকাশের পরই এই প্রশ্ন তুলে ‘সেভ বেঙ্গল বিজেপি’র তরফে টুইটে অমিত মালব্য ও অমিতাভ চক্রবর্তীদের ‘ফেলিওর গ্যাং’ বলে আক্রমণ করা হয়েছে। আসানসোলে কেন মাত্র ৪৮৫ ভোট পেয়ে দল তৃতীয় হল সেজন্য অগ্নিমিত্রা পালকেও কাঠগড়ায় তুলেছে তারা। রাজ্য নেতাদের নিশানা করে ‘সেভ বেঙ্গল বিজেপি’র টুইটে আরও বলা হয়েছে, ‘সেভেন স্টার কালচার’-এ থাকা অযোগ্য টিমের এটাই অবদান।
[আরও পড়ুন: আসানসোল সংশোধনাগারে অনুব্রত, জেলে কী কী পাবেন তৃণমূল নেতা?]
গত লোকসভার উপনির্বাচনে আসানসোলে জেতা আসন হাতছাড়া হয়েছিল বিজেপির। তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার কাছে বিপুল ভোটে হারতে হয়েছিল। এবার সেই আসানসোল পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে উপনির্বাচনে ৪৮৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে বিজেপি প্রার্থী। যেখানে তৃণমূল পেয়েছে ৬,৬৮৩ ভোট। আর দ্বিতীয় হওয়া বামেরা পেয়েছে ১,২০৬টি ভোট। বনগাঁতেও পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী ২,১১৮ ভোটে জিতেছেন। এখানে অবশ্য দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিজেপির প্রাপ্ত ভোট ৭৭৪। বনগাঁ পুরসভার এই ওয়ার্ডটি আবার বনগাঁ উত্তর বিধানসভার অধীন। এই বিধানসভা বিজেপির দখলেই রয়েছে। দলের মধ্যেই প্রশ্ন, এসএসসি, পার্থ-অনুব্রত গ্রেপ্তারি ইস্যু থাকা সত্ত্বেও কেন ওই দু’টি ওয়ার্ডের উপনির্বাচনে আশানুরূপ ফল পেল না গেরুয়া শিবির?
দলের বিক্ষুব্ধ শিবির মনে করছে, নিচুতলায় ভাঙাচোরা সংগঠন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব আর অপরিণত রাজনীতিবিদরা রাজ্য বিজেপির মাথায় থাকার জন্যই এই ফল। গত এপ্রিলে আসানসোল ও বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে দলের ভরাডুবি নিয়ে মুখ খুলে রাজ্য বিজেপির শীর্ষে থাকা নেতাদের অপরিণত রাজনীতিবিদ বলে তোপ দেগেছিলেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan)। এবার অবশ্য পুরসভার ওয়ার্ডের উপনির্বাচন বলে প্রকাশ্যে কোনও শীর্ষনেতা দলের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। তবে দলের অভ্যন্তরে ঘনিষ্ঠ মহলে অনেকেই বলছেন, বর্তমানে একাধিক বড় ইসু্যর কোনও সুবিধাই দল তুলতে পারল না। দু’টি ওয়ার্ডেই তৃণমূলের উপরই আস্থা রেখেছে মানুষ। শিক্ষা নেওয়া উচিত বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবিরের।