অভিরূপ দাস: ফের উত্তাল কলকাতা পুরসভা (KMC)। মেয়রের সামনেই হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন শাসক ও বিরোধী দলের কাউন্সিলররা। যা কলকাতা পুরসভার ইতিহাসে কার্যত নজিরবিহীন। মেয়রের অনুনয়-বিনয়েও থামানো যায়নি তৃণমূল-বিজেপি কাউন্সিলরদের খণ্ডযুদ্ধ। শনিবার অধিবেশন চলাকালীন কার্যত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় কলকাতা পুরসভায়।
দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলে ফের অধিবেশন শুরু হয়। কিন্তু সেইসময় ওয়াকআউট করে বিজেপি। পরে অশান্তিতে জড়িয়ে পড়া দুই কাউন্সিলর সজল ঘোষ (বিজেপি) ও অসীম বসুকে (তৃণমূল) শোকজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুরসভার চেয়ারপার্সন মালা রায়।
[আরও পড়ুন: মমতা-বিক্রমসিংহের সাক্ষাৎ নিয়ে ‘রসিকতা’, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে বিদেশমন্ত্রকে নালিশ তৃণমূলের]
এদিন অধিবেশন চলাকালীন মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পুরসভায় বিরোধী নেই। বিরোধীদের সংখ্যা এত কমে গিয়েছে আমাদের মধ্যে থেকেই বিরোধীদের আসনে বসাতে হবে।” উত্তরে বিজেপির কাউন্সিলর সজল ঘোষ বলেন, “মেয়রকে দেখলেও মাঝেমধ্যে বিরোধীই মনে হয়।” পালটা চেয়ারপার্সন মালা রায় বলেন, “আমরাও বিরোধী ছিলাম। আমাদের বিরোধিতা শেখাবেন না।” এসময় টেবিল বাজাতে শুরু করেন তৃণমূল কাউন্সিলররা। বিষয়টিকে কটাক্ষ করেন বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ। বলেন, “এই তো দলের সংস্কৃতি।” এরপরই বিজেপি কাউন্সিলরদের দিকে তেড়ে যান তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু। বলেন, “আমাদেরও পরিবার আছে। সংস্কৃতি তুলে কথা বলবেন না।” এনিয়ে কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। এরপরই মেয়রের সামনেই ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষকে ধাক্কা মারা হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বারবার অনুরোধ করেন মেয়র ফিরহাম হাকিম। কিন্তু তাতে কোনওপক্ষই কর্ণপাত করেনি।
বেশ কিছুক্ষণ পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। শুরু হয় অধিবেশন। কিন্তু ওয়াকআউট করে বিজেপি। সজল ঘোষ বলেন, “তৃণমূল কাউন্সিলর অসীম বসু একটা তোলাবাজ।” পালটা দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তাঁর কথায়, “বিজেপি কাউন্সিলররা সকলকে চোর বলেন। আসলে যাঁরা নিজেরা চোর, তাঁদের কাছে সারা পৃথিবীই চোর। আমায় চোর বললে আমি শান্ত থাকি। মাথা গরম করি না। কিন্তু সবাই তো সমান নয়। প্রত্যেকের পরিবার আছে। ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন না।” এরপরই পুরসভার বিশৃঙ্খলা নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন পুরসভার চেয়ারপার্সন, মেয়র পারিষদ অতীন ঘোষরা। তারপরই বিজেপির দুই কাউন্সিলরকে শোকজ করা হয়।