নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের জন্য ইতিমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে বিজেপি। একদিকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তরফে মন্ত্রীদের কাছ থেকে তাঁদের মন্ত্রকের কাজের খতিয়ান চেয়ে পাঠানোর পর তা খতিয়ে দেখার পর্ব চলছে। অন্যদিকে, দলের তরফে দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি মন্ত্রিসভায় যে সমস্ত প্রতিনিধি রয়েছেন, তাঁরা নিজেদের এলাকায় কী কী কাজ করেছেন, নিজের কেন্দ্রের আশপাশের এলাকায় মন্ত্রী হিসেবে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছেন, সেই হিসাবও নেওয়া হচ্ছে।
এই তালিকায় রয়েছে বাংলাও। কেন্দ্রের মোদি মন্ত্রিসভায় বাংলা থেকে প্রতিমন্ত্রী হিসাবে চারজন সদস্য রয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা রাজ্যের বাঁকুড়ার সাংসদ ডাঃ সুভাষ সরকার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক, জাহাজমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর এবং সংখ্যালঘু উন্নয়নমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী তথা আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা। জানা গিয়েছে, দেশের যে সমস্ত রাজ্যে বিজেপি শাসিত সরকার রয়েছে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী, যেখানে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিজেপি রয়েছে সেখানে বিরোধী দলনেতা এবং বাকি রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে দলের রাজ্য সভাপতির কাছ থেকে রাজ্য থেকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় জায়গা পাওয়া সদস্যদের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। বুঝে নেওয়া হচ্ছে, মন্ত্রী করে আখেরে কোনও লাভ হয়েছে কিনা।
[আরও পড়ুন: রাশিয়ায় ‘সেনা অভ্যুত্থান’, পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ওয়াগনার বাহিনীর]
বিজেপি সূত্রে খবর, কিছুদিন আগেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করতে দিল্লি এসেছিলেন। সেই সময় তাঁর কাছ থেকে রাজ্যের মন্ত্রীরা নিজেদের এলাকায় কতটা সময় দেন, কতটা কাজ করেছেন, সেখানে তাঁদের জনপ্রিয়তা কতটা সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। তবে শুভেন্দু কী রিপোর্ট দিয়েছেন তা সামনে আসেনি। যদিও বাংলা থেকে যে সমস্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রয়েছেন, তাঁরা নিজেদের এলাকায় কতটা কাজ করেছেন আর মন্ত্রী হয়ে কতটা প্রভাব বিস্তার করেছেন, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
সূত্রের খবর, সুভাষবাবু তাঁর এলাকায় আগে থেকেই জনপ্রিয় ছিলেন। বরং তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন ক্ষমতার অপব্যহার করছেন বলে প্রশ্ন উঠেছে। আবার শান্তনুর জনপ্রিয়তা মতুয়া সম্প্রদায়ের গণ্ডি পার করতে পারেনি বলেই শোনা গিয়েছে। নিশীথ তাঁর এলাকায় বিশেষ যান না এবং এলাকার লোকেদের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক রাখেন না বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে। বার্লার ক্ষেত্রে তেমন অভিযোগ না উঠলেও নিজের এলাকার বাইরে তাঁর কোনও প্রভাব আছে বলে শোনা যায়নি। সব মিলিয়ে বাংলার মন্ত্রীদের রিপোর্ট কার্ড মোটেও সন্তোষজনক নয় বলেই জানা গিয়েছে। এদিকে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের কাছ থেকে যে রিপোর্ট কার্ড চেয়ে পাঠানো হয়েছিল, তাতে বিগত ন’বছরে কী কী কাজ হয়েছে সেই খতিয়ান তৈরি হচ্ছে। এবং খুব শীঘ্রই সেগুলি নিয়ে দেশের বড় বড় শহরে কনক্লেভ করে প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে বলেই ঠিক হয়েছে।