নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: বিধানসভা ভোটের আর বেশি দেরি নেই। তবে তার আগেই বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে যত দ্রুত সম্ভব কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। এই আবেদন জানিয়ে মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে (ECI)চিঠি দিলেন বঙ্গ বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। এদিন কমিশনের দপ্তরে দেখা করে চিঠি দিল রাজ্যসভার বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের নেতৃত্বাধীন এক প্রতিনিধিদল। ছিলেন বঙ্গ বিজেপির সম্পাদক সব্যসাচী দত্ত, বিজেপি নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক শিশির বাজোরিয়া।
গত সপ্তাহেই বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার (JP Nadda) রাজ্য সফর ঘিরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। ডায়মন্ড হারবারে তিনি সভা করতে যাওয়ার পথে সরিষা, শিরাকোল, দেবীপুর – একাধিক জায়গায় তাঁর কনভয়ের উপর হামলা হয়। ভাঙচুর চলে গাড়িত। আক্রান্ত হন তাঁর সঙ্গে বিজেপি অন্যান্য নেতারাও। তার মধ্যে চোট বেশি পেয়েছিলেন বিজেপি কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তাঁর বাঁ হাতে চোট লাগে। এই ঘটনায় রাজ্য পুলিশের তরফে যথাযথ নিরাপত্তা দেওয়া হয়নি অভিযোগে সরব হয় বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনাস্থল সরাসরি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করেই নালিশ জানান জেপি নাড্ডা। এ নিয়ে নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে মুখ্যসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে তলব করে স্বরাষ্ট্র্মন্ত্রক। এ নিয়ে ফের কেন্দ্র-রাজ্য বড়সড় সংঘাতে জড়ায়।
[আরও পড়ুন: প্রমাণ করা হল না নাগরিকত্ব, ‘বিদেশি’ হিসেবেই মৃত্যু অসমের ১০৪ বছরের বৃদ্ধের]
নাড্ডার কনভয়ে হামলার ঘটনার পর থেকেই রাজ্যের নিরাপত্তার প্রশ্নে বারবারই রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে উদাসীনতা, রাজনৈতিক দলদাসে পরিণত হওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগ তোলেন বিজেপি নেতারা। এবার সেই অভিযোগ নিয়েই নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক সব্যসাচী দত্তের অভিযোগ, ”বাংলার পরিস্থিতি কাশ্মীরের চেয়েও খারাপ। আমরা চাই, এখানে দ্রুত নির্বাচনী বিধি লাগু করা হোক।” এ প্রসঙ্গে তিনি ভারতীয় সংবিধানের বিশেষ ধারার কথাও উল্লেখ করেছেন।
[আরও পড়ুন: পোষ্য কুকুরদের দেখাশোনা করতে রাজি না হওয়ায় বোনকে গুলি করে খুন দাদার]
চিঠিতে সামগ্রিকভাবে বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে, তৃণমূল এবং পুলিশের উদাসীনতায় যেভাবে রাজ্যে অরাজকতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তাতে নির্বাচনী প্রচার করা তাঁদের পক্ষে কঠিন। তাই দ্রুত কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হোক। তাহলে তাঁরা কিছুটি নিরাপদে প্রচারকাজ চালাতে পারবেন। বিজেপি সর্বভারতীয় সভাপতি প্রচারে এসে যেভাবে আক্রান্ত হলেন, সেই ঘটনার উল্লেখ করে তাঁদের এমন আরজি।সূত্রের খবর, রাজ্যের নির্বাচনী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে খুব শিগগিরই আসবেন ডেপুটি নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। হয়ত তারপরই বোঝা যাবে, বিজেপির এই আবেদনে নির্বাচন কমিশন কতটা সাড়া দিল।