অভিরূপ দাস: ফি মাসে পাঁচশো টাকা করে জমালেই হবে। তাহলেই বারো মাসে ছ’হাজার। ওই টাকা দিয়ে বছর শেষে একবার রক্ত পরীক্ষা। আর তাতেই ধরা পরবে স্তনের ক্যানসার।
অ্যাপোলা হাসপাতালের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ‘ডাটার ক্যানসার জেনেটিক্স’ শুরু করল নতুন রক্ত পরীক্ষা যার পোশাকি নাম, ‘ইজি চেক ব্রেস্ট।’ স্তনের ক্যানসার (Breast Cancer) ধরতে এতদিন ক্লিনিকাল ব্রেস্ট এক্সামিনেশন অথবা ম্যামোগ্রাফি করতে হতো। কিন্তু তাতে সমস্যা অনেক। ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. মুক্তি মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এই প্রক্রিয়ায় মহিলাদের টেকনিশিয়ানের সামনে স্তন সম্পূর্ণ উন্মোচন করতে হয়। যন্ত্রের মধ্যে স্তনে চাপ দিয়ে টেস্ট করাতে অনেকেই বিব্রত হন। সেক্ষেত্রে সাধারণ এই রক্ত পরীক্ষায় সে ঝঞ্ঝাট নেই।
[আরও পড়ুন: মাত্র ১০ বছর বয়সে প্রকাণ্ড স্তনযুগল! বিরল রোগে আক্রান্ত পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী]
এছাড়াও ম্যামোগ্রাফি টেস্টে রেডিয়েশন এক্সপোজারের সম্ভাবনা থাকে। এই টেস্টে সে ভয়ও নেই। হাত থেকে নেওয়া রক্তে ধরা পরবে মারণ ক্যানসার? ডা. অরুন্ধতী দে-র বক্তব্য, “স্তনে ম্যালিগনেন্ট টিউমার হলে টিউমার সেলগুলো রক্তের মধ্যে দিয়ে সঞ্চালিত হয়। স্বাভাবিক ভাবেই বিশেষ এই রক্ত পরীক্ষা বুঝতে পারবে আদৌ ক্যানসারের কোষ রয়েছে কি না স্তনে তৈরি হওয়া মাংস পিণ্ডে।” বয়স ত্রিশ পেরোলেই বছরে অন্তত একবার এই টেস্ট করাতে বলছেন চিকিৎসকরা। বুধবার শহরের এক পাঁচতারা হোটেলে নতুন এই রক্ত পরীক্ষার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে হাজির ছিলেন হাসপাতালের সিইও রানা দাশগুপ্ত। দেশে এই মুহূর্তে প্রতি বাইশজনে একজন স্তনের ক্যানসারে আক্রান্ত। রাজ্যের অবস্থাও তেমনই। এই টেস্ট সেখানে যুগান্তকারী হতে পারে। চিকিৎসকরা বলছেন, এই মুহূর্তে মহিলাদের মৃত্যুর অন্যতম কারণ স্তনের ক্যানসার। বাংলায় গ্রামাঞ্চলে স্তনে ছোট্ট ফুসকুরি দেখা দিলেও তা পরিবারের লোকজনকে জানাতে কুন্ঠা বোধ করেন মহিলারা। স্বাভাবিকভাবেই প্রথম পর্যায়ে স্তন ক্যানসারকে ধরা সম্ভব হচ্ছে না।
তৃতীয় অথবা চতুর্থ স্টেজে যখন ধরা পরছে তখন কিছু করার থাকছে না। বাংলার ১৭ টি অ্যাপোলো ক্লিনিক এবং দু’টি হাসপাতালে মিলবে এই ব্লাড টেস্ট। সরাসরি অ্যাপোলো ক্লিনিক অথবা হাসপাতালে ফোন করে যোগাযোগ করলেই হবে। ব্লাড টেস্ট করার ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট চলে আসবে হাতে। নাসিকের কেন্দ্রীয় গবেষণাগারে পরীক্ষা হবে সমস্ত রক্ত। আপাতত ওপিডি ব্যবস্থায় স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সুবিধা মেলেনা। তাই এই টেস্টের ক্ষেত্রেও মিলবে না স্বাস্থ্য সাথীর টাকা। ক্যানসার বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নিরানব্বই শতাংশ সঠিক রিপোর্ট দেবে এই টেস্ট।