সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: করোনা আবহে রাজ্যের পুরসভা নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে। বদলে মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া পুরসভাগুলিতে বসানো হচ্ছে প্রশাসক। অন্যান্য পুরসভার মতো মহেশতলা পুরসভারও মেয়াদ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে দায়িত্ব নিল প্রশাসনিক বোর্ড। পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যানকেই প্রশাসক পদে বসিয়ে সাত সদস্যের এই প্রশাসনিক বোর্ড তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ডের সদস্য হিসেবে রয়েছেন ছয় বিদায়ী কাউন্সিলর।
নির্বাচনে জিতে ২০১৫ সালের ১৪ মে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় মহেশতলা পুরবোর্ডে ক্ষমতায় বসে তৃণমূল কংগ্রেস। চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন দুলালচন্দ্র দাস। বুধবারই সেই নির্বাচিত পুরবোর্ডের মেয়াদ ফুরিয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ পুরবোর্ডের দায়িত্ব তাই নিয়মমাফিক হস্তান্তর করা হয়েছে প্রশাসকের হাতে। রাজ্য সরকার মনোনীত সাত সদস্যের বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেটরস বৃহস্পতিবারই মহেশতলা পুরসভার দায়িত্ব নেয়। বিধায়ক ও নির্বাচিত পুরবোর্ডের বিদায়ী চেয়ারম্যান দুলালচন্দ্র দাসকেই প্রশাসনিক বোর্ডের প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার দেওয়া হয়েছে। নতুন প্রশাসনিক বোর্ডের অন্যান্য ছয় সদস্য – আবু তালেব মোল্লা, তাপস হালদার, পীযূষ দাস, সুকান্ত বেরা, রেবা কয়াল ও রাজিয়া খাতুন। এই ছ’জনই ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত বিগত পুরবোর্ডের শাসক দলের কাউন্সিলর ছিলেন।
[আরও পড়ুন: কোভিড টেস্টের জায়গা বাছতে গিয়ে ‘হেনস্তা’, অপমানে আত্মহত্যা স্বাস্থ্যকর্মীর]
স্থানীয় বিধায়ক ও প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারপার্সন দুলালচন্দ্র দাস জানান, ”করোনার দাপটেই স্থগিত রাখা হয়েছে পুরনির্বাচন। তাই মেয়াদ ফুরনোয় সরকার নিয়ম অনুযায়ী প্রশাসনিক বোর্ডের হাতেই ক্ষমতা হস্তান্তর করতে বাধ্য হয়েছে। যতদিন না পর্যন্ত নির্বাচিত পুরবোর্ড গঠন হয়, ততদিন কাজ চালিয়ে যাবে এই প্রশাসনিক বোর্ড। উন্নয়নের কাজ যেমন চলছিল তেমনই চলবে। কোনওভাবেই উন্নয়নের গতি থমকে যাবে না।”
এদিকে, সরকারি আধিকারিককে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ না করায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। সিপিএম সরাসরি কিছু না বললেও বিজেপি রাজ্য সরকারের এই নীতির সমালোচনা করেছে। ডায়মন্ড হারবার জেলার বিজেপি সভাপতি উমেশ দাস বলেন, ”তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার কোনওকালেই কোনও নিয়মনীতির তোয়াক্কা করে না। মহেশতলা পুরসভায় প্রশাসনিক বোর্ড গড়তেও তাই সেসব আইনকানুন মানা হয়নি। দলীয় ছয় কাউন্সিলরকে বোর্ডের সদস্য করে তৃণমূলের বিদায়ী পুর চেয়ারম্যানকেই প্রশাসক হিসেবে বসানো হয়েছে। কোনও সরকারি আধিকারিককে বোর্ডে রাখা হয়নি।” তাঁর মতে, নতুন করে পুরসভার ক্ষমতায় বসা ওই সাত বিদায়ী কাউন্সিলর ছাড়া তৃণমূলের বাকি বিদায়ী কাউন্সিলররাও এমন সিদ্ধান্তের কথা জানতেন কিনা সন্দেহ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে দুলাল দাসের প্রতিক্রিয়া, তৃণমূলই বিগত পুরবোর্ডে শাসন ক্ষমতায় ছিল। তাই প্রশাসনিক বোর্ডেও তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলররা থাকবেন, এটাই স্বাভাবিক।
[আরও পড়ুন: বাসের অপেক্ষায় ট্রানজিট সেন্টারে ৫ ঘণ্টা, জল-খাবার না পেয়ে ক্ষোভ রোগীর পরিবারের]
The post মহেশতলা পুরসভার দায়িত্বেও প্রশাসকমণ্ডলী, বিদায়ী চেয়ারম্যানই হলেন চেয়ারপার্সন appeared first on Sangbad Pratidin.