মনিরুল ইসলান, উলুবেড়িয়া: বুধবার রাতে সঞ্জীবন কোভিড (COVID) হাসপাতাল থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া করোনা রোগী অর্পণ মণ্ডলের দেহ মিলল এক পুকুরে। শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা পুকুরে দেহটি ভাসতে দেখেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ ও স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্মীরা। তাঁরা মৃতদেহ উদ্ধার করে। দেহ উদ্ধারের পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতাল। চলে বিক্ষোভ, ভাঙচুরের চেষ্টা। পুলিশের চেষ্টায় কয়েক ঘণ্টা পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১২ অক্টোবর বেলা ১১টা নাগাদ করোনা আক্রান্ত ওই যুবক, অর্পণকে সঞ্জীবন কোভিড হাসপাতালে ভরতি করা হয়। তার বাড়ি উলুবেড়িয়ার (Uluberia) জোয়ারগড়ি এলাকায়। বুধবার রাত ১২টা নাগাদ তিনি সকলের চোখে ধুলো দিয়ে সাধারণ পোশাক পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান। শুক্রবার সকালে মেলে দেহ। এরপরই হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে সরব হয় রোগীর পরিবার। মৃতের দেহ কয়েক ঘণ্টা আটকে রেখে দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুলিশ দীর্ঘক্ষণ তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করে। অভিযোগ, বিক্ষোভকারীরা কোনও কথা শুনতে চাননি। এরপরই উলুবেড়িয়ার আইসি কৌশিক কুণ্ডুর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশবাহিনী, কমব্যাট ফোর্স ও ব়্যাফ নামানো হয়। যান হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায়ও। ঘণ্টা তিনেক পর পুলিশ কোনওরকমে দেহ উদ্ধার করে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলা সিন্ডিকেট রাজ ও পুলিশি সন্ত্রাসের মুক্তাঞ্চল’, ফের টুইটে রাজ্যকে তোপ ধনকড়ের]
পুলিশ দেহ নিয়ে যাওয়ার সময়ও শবদেহবাহী গাড়ি কোভিড হাসপাতালের সামনে জোর করে দাঁড় করিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। গাড়ির ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন অনেকে। অভিযোগ, কেউ কেউ হাসপাতাল লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে। এপ্রসঙ্গে হাওড়া গ্রামীণ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা অনেক বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা তা আমল দিতে চায়নি। পরে অবশ্য তাঁদের বুঝিয়ে মৃতদেহ নিয়ে আসা হয়। করোনা বিধি মেনেই ওই মৃত যুবকের শেষকৃত্য করা হবে।” হাসপাতালের কর্তা সুভাশিষ মিত্র বলেন, “আমরা যথেষ্ট কড়া নজর রাখি। স্বাস্থ্যকর্মীদের ডিউটি চেঞ্জের সময় ওই যুবক শৌচালয়ে গিয়ে সাধারণ পোশাকপরে বেরিয়ে যান। তাই বোঝা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া হাসপাতাল তো আর জেলখানা নয়। তা সত্ত্বেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখানে ছিল। তবে আজ যেভাবে আন্দোলন করা হয়েছে দেহ সামনে রেখে তাতে চিকিৎসক হিসেবে বলব, বাঞ্ছনীয় নয়।” কিন্তু প্রশ্ন উঠছে কীভাবে মৃত্যু হল অপর্ণের? আত্মঘাতী হয়েছেন ওই যুবক নাকি নেপথ্যে অন্য রহস্য?