সুব্রত বিশ্বাস: বাগুইআটি কাণ্ডের ছায়া হরিদেবপুরে। দশমীর রাত থেকে নিখোঁজ যুবকের দেহ উদ্ধার ঘিরে হরিদেবপুরে ধুন্ধুমার। যুবকের প্রেমিকার পরিবারের বিরুদ্ধে উঠেছে খুনের অভিযোগ। প্রেমিকা ও তাঁর মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। প্রেমিকার বাড়িতে ভাঙচুর স্থানীয়দের। তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে হরিদেবপুর থানা ঘেরাও করেন নিহত যুবকের প্রতিবেশীরা।
নিহত অয়ন মণ্ডল হরিদেবপুরের বাসিন্দা। অয়নের পরিবারের দাবি, দশমীর রাতে প্রেমিকার ফোন পান অয়ন। বাড়ি থেকে বেরোন। বাবা-মাকে বলে যান পূর্ব পুটিয়ারির দীনেশ পল্লিতে প্রেমিকার বাড়িতে যাচ্ছেন। গভীর রাত হয়ে গেলেও বাড়ি ফেরেননি অয়ন। তাঁর মোবাইল সুইচড অফ। বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ হরিদেবপুর থানায় যান অয়নের বাবা। তাঁর দাবি, অভিযোগ নিতে টালবাহানা করে পুলিশ। প্রেমিকা এবং তাঁর বাবা-মাকে থানায় ডেকে নিয়ে আসতে বলেন। এই টালবাহানার ফলে দীর্ঘক্ষণ থানায় অয়নের পরিবারের লোকজনকে বসিয়ে রাখা হয় বলেই অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: রেড রোডে কার্নিভ্যাল, প্রশাসনের নির্দেশে একদিনের জন্য চাকরিপ্রার্থীদের ধরনা প্রত্যাহার]
এরপর বৃহস্পতিবার রাতে মগরাহাট পুলিশ ক্যাম্পের পাশ থেকে অয়ন মণ্ডলের দেহ উদ্ধার হয়। টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে হরিদেবপুরের আশপাশ থেকে অয়নের মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়। ভিডিওগ্রাফি করে তাঁর দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। এরপর অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের দেহ উদ্ধারের কথা কলকাতা পুলিশকে জানানো হয় বলেই দাবি মগরাহাট থানার। তা সত্ত্বেও হরিদেবপুর থানার পুলিশ কোনও উদ্যোগ নেয়নি বলেই অভিযোগ। লালবাজারে যাওয়ার পর শুক্রবার অয়নের বাবা-মাকে ওই দেহটি দেখানো হয়। এরপরই তাঁরা দেহ শনাক্ত করেন। অয়নের পরিবারের অভিযোগ, যুবকের প্রেমিকার বাড়ির লোকজনই খুন করেছে তাঁকে। এরপর পুলিশ অয়নের প্রেমিকা ও তাঁর মাকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
এদিকে, অয়নের প্রেমিকা খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দাবি, দশমীর রাতে অয়ন মণ্ডল তাঁর বাড়িতে আসে। ধর্ষণের চেষ্টা করে। বাবা-মা দেখে ফেলে। ভয়ে ছুটে ছাদে চলে যায় অয়ন। সেখান থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়। এরপর আর অয়নের সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি তাঁর। হরিদেবপুর থানার বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে সরব অয়নের পরিবারের লোকজন। শুক্রবার সন্ধেয় হরিদেবপুর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তার ফলে থানার সামনের রাস্তায় ব্যাপক যানজট তৈরি হয়। পুলিশ মাইকিং করে অবরোধ হঠানোর চেষ্টা করে। তবে যুবক খুনের ঘটনায় এখনও উত্তপ্ত হরিদেবপুর।