দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: উচ্চশিক্ষিত ছেলে বাধ্য হয়ে হোম ডেলিভারির কাজ করছেন। যা মেনে নিতে পারছিলেন না হুগলির (Hooghly) কোন্নগরের সরকার দম্পতি। ফলে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন তাঁরা। যার জেরে চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন।
জানা গিয়েছে, ওই দম্পতির নাম দীপক ও ভবানী সরকার। দু’জনই অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী। হুগলির কোন্নগরের এস সি চট্টোপাধ্যায় স্ট্রিটে ছেলের সঙ্গে থাকতেন তাঁরা। ছেলে দিব্যেন্দু উচ্চশিক্ষিত। আগে ট্যুরের ব্যবসা করতেন। বছর দেড়েক আগে বিয়েও করেন। কিছুদিন যেতে না যেতেই লকডাউনের (Lockdown) কারণে বন্ধ হয়ে যায় সেই ব্যবসা। ফলে আর্থিক সমস্যা তৈরি হয়। এরপর কার্যত বাধ্য হয়েই হোম ডেলিভারির কাজ শুরু করেন দিব্যেন্দু। যা তাঁর বাবা-মা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিলেন না। এই পরিস্থিতিতে ওই যুবকের স্ত্রী শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে চলে যান। অনটনকে সঙ্গী করেই চলছিল বাবা-মা ও ছেলের সংসার। অন্যান্যদিনের মতোই শনিবার রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমোতে যান ওই বৃদ্ধ দম্পতি।
[আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা বিজেপি নেতার পরিবারের, অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির]
দিব্যেন্দু জানান, রবিবার সকালে তিনি ঘুম থেকে উঠে দেখেন তাঁর মা ঠাকুর ঘরে আর বাবা ঘরে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছেন। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লকডাউনে আর্থিক সমস্যার কারণে পারিবারিক জীবনও অশান্ত হয়ে উঠেছিল তাঁদের। সেইসঙ্গে উচ্চশিক্ষিত ছেলের হোম ডেলিভারির পেশার কারণে মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন ওই দম্পতি। এই নিয়ে প্রায়ই ছেলের সঙ্গে অশান্তিও হতো। প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করছে, এহেন মানসিক অশান্তির জেরেই আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। প্রতিবেশীরা জানান, অত্যন্ত ভাল ছিলেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। কোনওদিন কাউকে আঘাত করে কথা বলতেন না। সরকার দম্পতির মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই শোকের ছায়া এলাকায়।