সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেই যে বলে, ‘নামেই তালপুকুর, ঘটি ডোবে না।’ প্রচলিত প্রবাদের আড়ালে অর্থ যাই থাক, প্রাথমিক উচ্চারণে যে ছবিটা ফুটে ওঠে অবিকল তেমনটাই হয়ে উঠেছে বলিভিয়ার (Bolivia) উরু উরু লেক (Uru Uru)। যার সামনে দাঁড়ালে আপনি সংশয়ে পড়ে যাবেন, এটা কীসের হ্রদ? জলের নাকি প্লাস্টিকের (Plastic)। প্রকৃতিকে খুন করতে উদ্যত মানুষের বোধহীন আচরণের এক তুমুল প্রকাশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই হ্রদ।
কী নেই ওই হ্রদে! প্লাস্টিকের বোতল, পাত্র, খেলনা তো আছেই। সঙ্গে রয়েছে টায়ারও। সব মিলিয়ে দৃশ্যতই এক দুঃস্বপ্নের বেসাতি। স্বাভাবিক ভাবেই এমন দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছেন পরিবেশবিদ ও পরিবেশপ্রেমী সচেতন মানুষেরা। ভাইরাল হয়ে গিয়েছে প্লাস্টিকের হ্রদের ছবি। কিন্তু কী করে এই দশা হল নদীটির? ২০১৬ সালে পশ্চিম বলিভিয়ার হাইল্যান্ড লেক অঞ্চলে দেখা দেয় প্রবল খরা। ফলে জলকষ্টে ভুগতে হয় মানুষকে। সেই সময় হ্রদের জলস্তর অনেকটাই নেমে যায়। তারপর থেকেই ক্রমে গত কয়েক বছরে নদীর শরীর উপচে পড়েছে প্লাস্টিকে।
[আরও পড়ুন: ইউরি গ্যাগারিন কি সত্যিই মহাকাশে যাওয়া প্রথম মানুষ? ইতিহাসের আড়ালে সংশয়ের কাঁটা]
অবশেষে বোধোদয় হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা মিলে নেমে পড়েছেন হ্রদটিকে প্লাস্টিকমুক্ত করতে। একেবারে সম্প্রতি দেখা গিয়েছে প্রায় শ খানেক মিলে নেমে পড়েছেন হ্রদে। প্রসঙ্গত, তলানিতে থাকা হ্রদের সামান্য জলও বিষাক্ত হয়ে গিয়েছে স্থানীয় কলকারখানা ও খনির বর্জ্য মিশে। এর জলের বিশুদ্ধিকরণের কথাও ভাবা হচ্ছে। ২৮ বছরের মাগালি হুয়ারাচি সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে প্লাস্টিকের স্তূপের মধ্য়ে দাঁড়িয়ে জানিয়েছেন, ”এই মুহূর্তে আমরা আবর্জনার স্তূপে রয়েছি। এই গ্রহের ধ্বংসকারী হয়ে ওঠার পর থেকে অবশ্য আমরা এভাবেই থাকি। এটা একটা হ্রদ, তবে জলের নয়, প্লাস্টিকের।”
আপাতত হ্রদটিকে দূষণমুক্ত করার দিকেই লক্ষ্য স্থানীয় পরিবেশবিদদের। এমনিতে হ্রদটি বর্জ্যপূর্ণ হয়ে পড়ার পর থেকে এর জীববৈচিত্র্যও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। এলাকার আরেকটি হ্রদ পুপোর মতো উরু উরুও যাতে নষ্ট না হয়ে যায় আপাতত সেটা নিশ্চিত করাই সংকল্প পরিবেশপ্রেমীদের। আর সেটা খুব কঠিন নয় বলেই মত তাঁদের। এক পরিবেশপ্রেমীর কথায়, ”আমি মনে করি সকলে একটু একটু করে যদি কাজ করি, সে আবর্জনা পরিষ্কার করা হোক কিংবা অন্যভাবে এগিয়ে আসি তাহলেই আবার আগের মতো সুন্দর হয়ে উঠবে এই জলাশয়।”