ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বোলপুর: ফের পাঁচিল নির্মাণ করতে গিয়ে বাধার মুখে বিশ্বভারতী (Vishva Bharati) কর্তৃপক্ষ। শনিবার বোলপুর পুরসভার দুই পুর প্রশাসক ঘটনাস্থলে এসে কাজ বন্ধ করে দেন। তাঁরা জানিয়ে দেন, বিশ্বভারতীর জায়গায় মধ্যে পিডব্লুডি-র (PWD) জায়গা রয়েছে। তাই সর্বত্র এভাবে পাঁচিল তোলা যাবে না। পূর্ত দপ্তরের ওই জায়গা মাপজোক করার পর ছেড়ে দেওয়ার জন্য বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। যতক্ষণ না জমি সমস্যার সমাধান হচ্ছে, ততক্ষণ তাঁদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে পুরসভা।
শনিবার সকালে বোলপুর-শান্তিনিকেতন (Santiniketan) রাস্তার পাশে বিশ্বভারতীর দেওয়া পাঁচিলের উপর ঢালাই দেওয়ার কাজ চলছিল। তা চোখে পড়ামাত্র স্থানীয় ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ শুরু করেন। পাঁচিলের উচ্চতা নিয়ে আপত্তি তোলেন তাঁরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাঁচিল এমনভাবে তোলা হচ্ছে, যাতে পিডব্লুডি-র রাস্তার ধারে থাকা ব্যবসায়ীরা পলিথিনের চালা না করতে পারেন। এরপরেই বোলপুর পুরসভার দুই পৌর প্রশাসক ওমর শেখ এবং সুকান্ত হাজরা গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। তাঁরা জানিয়ে দেন, গত ২০২০ সালের ৪ঠা ডিসেম্বর বিশ্বভারতীকে এই পাঁচিল তোলা নিয়ে চিঠি দিয়ে ছিল বোলপুর পুরসভার। সেখানে উল্লেখ করা ছিল বিশ্বভারতী জায়গার মধ্যে পিডব্লুডি-র জায়গা রয়েছে।
[আরও পডুন: ‘মোদির মতো জালিয়াত প্রধানমন্ত্রী দেখিনি’, বেনজির আক্রমণ অনুব্রত মণ্ডলের]
এদিন দমকল বিভাগের সামনের পুরনো রেজিস্টার অফিসের জায়গাটি পাঁচিল দিয়ে ঘেরার কাজ চলছিল। প্রায় ৪ ফুট পাঁচিলের উপর ৫ ফুটের ফেন্সিং-এর কাজ করা হচ্ছিল বলে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে। পাঁচিলের গায়ে রাস্তার পাশে পিডব্লুডি-রজায়গায় ফুটপাতে বহু দোকান রয়েছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, পাঁচিলের উচ্চতার জন্য দোকানগুলির ছাউনিতে সমস্যা হচ্ছিল। তাই তাঁরা কারণেই পাঁচিল তৈরিতে বাধা দেওয়া হয় । ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভে সাময়িক এলাকায় উত্তেজনা দেখা দেয় এলাকায়৷ এরপরই ঠিকাদারদের নির্দেশে কাজ বন্ধ করে দেন নির্মাণকর্মীরা। যদিও বিষয়টি নিয়ে বিশ্বভারতীর মুখপাত্র অনির্বাণ সরকার কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করেন।
[আরও পডুন: সভা বাতিলে ব্যাপক ক্ষোভ মতুয়াদের, খুব শিগগিরই ঠাকুরনগরে অমিত শাহ!]
প্রসঙ্গত, গত কয়েক মাস ধরে পাঁচিল তোলা নিয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্বন্দ্ব চলছে৷ এর আগে পৌষমেলার মাঠে পাঁচিল দেওয়া ঘিরে বেধে গিয়েছিল ধুন্ধুমার। বোলপুরের সাধারণ মানুষ এসে পাঁচিল ভেঙে দেন। পরে রতনপল্লি, সঙ্গীতভবনের সামনেও এই একই বিষয় নিয়ে স্থানীয়দের বিক্ষোভ চলে। দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের ব্যবহার করা দূরদর্শনের সামনের রাস্তায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ পাঁচিল দেওয়ার সময়ে খোদ জেলাশাসক ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। প্রশাসনের তরফে বিশ্বভারতীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, কার অনুমতিতে তারা পাঁচিল তুলছে? কোনও লিখিত অনুমতি আছে কিনা? সদুত্তর না পেয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় নির্মাণকাজ। সবমিলিয়ে এই মুহূর্তে পাঁচিল নির্মাণ নিয়ে বেশ চাপে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।