দেব গোস্বামী, বোলপুর: এলাকা দখল নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমাবাজি! তৃণমূলের আদি-নব্যের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র চেহারা। গুরুতর আহত দুপক্ষের অন্তত ১১ জন। ঘটনাস্থল বীরভূমের পাড়ুই, বিষ্ণুখন্ডা গ্রাম।
মঙ্গলবার, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিবাদকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গ্রাম। বাঁশ,লাঠি, লোহার রড নিয়ে ব্যাপক সংঘর্ষ বাঁধে। চলে ইটবৃষ্টি, মারধর। বোমাবাজি, বারুদের গন্ধে আতঙ্ক ছড়ায় গ্রামজুড়েই। গুরুতর আহতরা কেউ সাওর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, কেউ আবার বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি। গ্রামবাসীদের অভিযোগ,কিছু বিজেপি কর্মী লোকসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন। ভোট শেষ হতেই গ্রাম দখলের চেষ্টা করেন তাঁরা। বেশ কয়েক দিন ধরেই এ নিয়ে গ্রামে একটি অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুরনো কর্মীরা নতুন তৃণমূল কর্মীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এই ঘটনা ঘিরেই আজ তেতে ওঠে বিষ্ণুখণ্ডা গ্রাম। তাদের আরও দাবি, লোকসভায় তৃণমূলের ভালো পারফরম্যান্স উপলক্ষে অনুষ্ঠান করেছিলেন পুরনো তৃণমূল কর্মীরা। সেখানেই চড়াও হন নব্য তৃণমূল সদস্যরা। কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। লুটপাটের অভিযোগও রয়েছে। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী গ্রামে আসে। তল্লাশি চালানো হয় গ্রামে। টহলের পাশাপাশি পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে। ৪ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদও শুরু করেছে পাড়ুই থানার পুলিশ।
[আরও পড়ুন: খাবার নেই, জলও শেষ! বীরভূমের ২৮ পড়ুয়া আটকে ধস কবলিত সিকিমে]
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, "তৃণমূল নেতা সেখ সুজন, সেখ সুকুর গোষ্ঠীর সাথে দলের অপর গোষ্ঠী পেয়ার আলি, বসির সেখের দলবলের মধ্যেই এই লড়াই বেঁধেছে। আর পাঁচ জায়গার মত এই লড়াইয়ের পিছনেও রয়েছে এলাকার রাশ কোন গোষ্ঠী হাতে থাকবে।" ঘটনায় জখম সেখ সুজন বলেন, "দুই পক্ষই তৃণমূল। আমরা পুরনো তৃণমূল। বসির, পেয়ার আলিরা সিপিএম- বিজেপি ছেড়ে এখন তৃণমূলে ঢুকেছে। পরব চলছে। আমরা বসেছিলাম এক জায়গায়। তখন আচমকা এসে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমার দুই হাত ভেঙেছে। আরও বেশ কয়েকজন জখম হয়েছে।" গ্রামের বাসিন্দা সেখ গোলেমান বলেন,"তৃণমূলেরই দুই গোষ্ঠীর লড়াই। এক পক্ষ বক্স বাজিয়ে আনন্দ করছিল। অপরপক্ষের সাথে কোনও কারনে বিবাদ বাঁধে। তার পরই শুরু হয়ে বোমাবাজি, হামলা। এই ঘটনায় আমরা খুবই আতঙ্কিত। পরিবার নিয়ে ভয়ে আছি।"
[আরও পড়ুন; কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার দায় কার? মালগাড়ির মৃত চালকের বিরুদ্ধেই FIR]
ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির বোলপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্ন্যাসীচরণ মণ্ডল বলেন,"ভোটের পর গ্রামের দখল কাদের হাতে থাকবে। তাই নিয়েই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। বিজয় উৎসবের নাম করে মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন।" যদিও তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানতে রাজি হয় নি। গ্রাম্য বিবাদ বলেই জানিয়েছে।