সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অস্ট্রেলিয়ান ‘সামার’ কি কয়েক মাস এগিয়ে এল? লোকে ভুলে গেল, ও দেশে এখন ক্রিকেট নামক খেলাটার পাতা ঝরার মরশুম? ভুলে গেল, শীতে এ সময় ক্রিকেট বন্ধ থাকে ব্র্যাডম্যানের দেশে?
প্রাক্তন ও বর্তমান–দুই প্রজাতির অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারের রকমসকম দেখলে এ হেন ধন্দ হওয়া, অস্বাভাবিক নয়। মাঝ আগস্টে অস্ট্রেলিয়ায় রমরমিয়ে ‘ফুটি’-র মরশুম চলে। ‘এএফএল’ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, বাগ-বিতণ্ডা চলে। খেলার পাতায় ক্রিকেট আবার জায়গাপত্তর পায়, গ্রীষ্ম এলে। কিন্তু ভারত সিরিজ নিয়ে যে রকম টগবগ করছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট সমাজ, প্রাক্তন থেকে বর্তমান, সমস্ত ক্রিকেটাররা রোজ যে ভাবে কিছু না কিছু বলে চলেছেন, খেলার পাতাতেও যে ভাবে এখন থেকে প্রাধান্য পাচ্ছে নভেম্বরের ভারত সিরিজ–তা এক কথায় অভূতপূর্ব। স্টিভ স্মিথ ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন, ওপেনিংয়ে যাবেন কি না? নাথন লায়ন ঠিক করে ফেলেছেন, দশ বছরের অভিশাপ কাটানোর সঙ্গে যশস্বী জয়সওয়ালের উইকেটটা নিতে হবে। প্যাট কামিন্স আবার ভারত সিরিজের আগে নিজেকে বিশ্রামে রাখছেন। বাকি সব চুলোয় পাঠিয়ে।
ম্যাথু হেডেনও তো। পাঁচ টেস্টের পূর্ণাঙ্গ সিরিজ শুরুর কয়েক মাস আগে থাকতে অস্ট্রেলিয়ার পয়লা নম্বর ‘মহাশত্রু’ নির্বাচন করে ফেললেন! ঋষভ পন্থ। এক কালের দুর্ধর্ষ অস্ট্রেলীয় ওপেনারের কেন জানি না মনে হচ্ছে, পন্থের ‘মাসল মেমোরি’ ও জেতার তাড়না বিপদে ফেলতে পারে ব্যাগি গ্রিনকে।
‘‘অস্ট্রেলিয়ায় গত সিরিজেও দারুণ খেলেছিল ঋষভ। আমাদের দেশের মানুষও ওকে পছন্দ করে, ওর খেলা ভালোবাসে। আসলে মাসল মেমোরি আর জয়ের খিদে বড় শক্তি পন্থের। তার উপর টিমে আবার বিরাট কোহলি থাকবে। যে কি না চাইবে আবার ছাপ রেখে যেতে। অস্ট্রেলীয় পরিবেশে ভারতীয় ব্যাটাররা কী করে, দেখতে উৎসুক আমি,’’ মঙ্গলবার বলে দিয়েছেন হেডেন।
[আরও পড়ুন: টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে ফিরছে বিরল ঘটনা, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৬ দিনের ম্যাচ খেলবে শ্রীলঙ্কা]
২০২২ সালে ভয়াবহ গাড়ি দুর্ঘটনার ধাক্কা সামলে দীর্ঘ সময় পর ক্রিকেটে ফিরে এসেছেন পন্থ। ২০২০-’২১ সালের অস্ট্রেলিয়া সফরে যাঁর ব্যাটিং এখনও ভোলা যায়নি। কে ভুলেছে ব্রিসবেনে পন্থের সেই ম্যাচ জেতানো অবিস্মরণীয় ইনিংস? ‘‘সেই সিরিজটা ভারতকে কোথায় বিশ্বাস দেবে জানেন? সেই সিরিজে মাঝপথ থেকে বিরাট কোহলি ছিল না। গাব্বায় দ্বিতীয় সারির বোলিং লাইন আপ নিয়ে নামতে হয়েছিল ভারতকে। কিন্তু তার পরেও সিরিজ ভারতই জেতে। ভারত এবার যখন খেলতে আসবে, ওরা তো ভাববে যে, আগে আমরা অস্ট্রেলিয়া থেকে সিরিজ জিতে ফিরেছি। সেটাও পূর্ণ শক্তির দল না নামিয়ে। সে বার পারলে, এবার পারব না কেন?’’
[আরও পড়ুন: রিজওয়ানের ডবল সেঞ্চুরি কাড়লেন অধিনায়ক! পাক ক্রিকেটে দ্রাবিড়-শচীন বিতর্কের ছায়া]
বোঝা গেল, অস্ট্রেলীয়রা কেন এবার এত আগে থেকে নেমে পড়েছেন? আসলে প্রতিশোধস্পৃহা। দশ বছর ধরে বর্ডার-গাভাসকর ট্রফি দখলে না রাখতে পারার জ্বালা। তাই আসন্ন গ্রীষ্মের ক্রিকেট উত্তাপে এখন থেকেই নিজেদের সেঁকতে শুরু করেছেন তাঁরা। পোশাকি নামও যার হয়েছে একটা।
সামার অফ অ্যান্টিসিপেশন!