সুব্রত বিশ্বাস: স্বাস্থ্য ও অপরিচ্ছন্নতা। পরস্পর বিরোধী দুই বিষয়ের সহাবস্থান বিআর সিং হাসপাতালে। রোগীরা বলছেন, ‘‘ছি ছি এত্তা জঞ্জাল।” চিকিৎসকরা পালটা বলছেন, ওঁদের জন্যই এই এই হাল। এই মুহূর্তে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম হাসপাতালের তকমা বিআর সিংয়ের গলায় যেমন ঝুলছে, তেমনই তার দেওয়ালে পান থেকে গুটখার পিকের বিসদৃশ্য ছাপও লেগে রয়েছে। যখন দেশজুড়ে পরিচ্ছন্নতার অভিযান চলছে তখন রেলের এই হাসপাতালের চিত্র একেবারে বিপরীত। হাসপাতালের গ্রিলগুলির ফাঁক দিয়ে পানের পিক এতটাই ফেলা হয়েছে যে, পিকের স্তর জমে গিয়েছে পুরু চাদরের আকারে। দেওয়ালজুড়ে খয়েরি ছোপ।
[মেট্রোর কাজের জন্য রেললাইনে ধস, ব্যাহত চক্ররেল পরিষেবা]
রেল স্টেশনের মতো খোলা জায়গায় পান বা গুটখার পিক ফেললেই জরিমানা ১০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। দক্ষিণেশ্বরে নতুন স্কাইওয়াক চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পিকের ছোপে দেওয়াল রঙিন হয়ে ওঠে। এর পরেই ৫০০০ টাকা জরিমানা ঘোষণার সঙ্গে কড়া নজরদারিতে দমন হয় পিকের দৌরাত্ম্য। কিন্তু হাসপাতালের ঘেরাটোপে আরপিএফের প্রহরা সত্ত্বেও চলছে এই পিক ফেলে নোংরা করার মতো কাজ। চিকিৎসকদের সাফ জবাব, অধিকাংশই অবাঙালি রোগী ও তাঁদের আত্মীয়। গুটখার পিক ফেলার বদভ্যাস বেশি মাত্রায় তাঁদেরই। যদিও বি আর সিং হাসপাতালের এমডি ডা. কেএল দাস জানিয়েছেন, পিক ফেলার মতো বদভ্যাস বন্ধের প্রক্রিয়া চলছে। তবে কী সেই প্রক্রিয়া তা তিনি জানাননি।
[লাইন মেরামতির পর ছন্দে ফিরল ডুয়ার্স রুটের ট্রেন চলাচল]
পূর্ব রেল জানিয়েছে, স্বচ্ছতার অভিযান চলছে। তা চালায় স্বাস্থ্য দপ্তর। বিআর সিং হাসপাতালে অবশ্যই পরিচ্ছন্নতার অভিযান চলে নিয়মিতভাবে। তবে এই ধরনের পিক গ্রিল বা জানালা দিয়ে সানসেটে ফেলায় সেখানে সাফাই কর্মীরা পৌঁছতে পারেন না, তাই সেই জায়গা অপরিচ্ছন্ন থাকে। এজন্য রোগী বা আত্মীয়দের সতর্ক করা হবে। চালানো হবে প্রচার। লাগানো হবে পোস্টার। রেলের এই বৃহত্তর হাসপাতালটি এভাবে নোংরা করায় ক্ষুব্ধ রোগীদের অধিকাংশই। তাঁরা বলেন, সচেতনতার অভাব যেমন রয়েছে, তেমন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উপযুক্ত পদক্ষেপেরও অভাব রয়েছে। নেই নজরদারি। পরিচ্ছন্ন করার অভাবে সেই জায়গা স্থায়ীভাবে নোংরা হচ্ছে। যাঁরা নোংরা করেন, তাঁরা ভাবছেন এটাই পিক ফেলার জায়গা ও তা ফেলার অধিকার তাঁদের রয়েছে।
The post পান-গুটখার পিকে মলিন বিআর সিং হাসপাতালের ঐতিহ্য appeared first on Sangbad Pratidin.