সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একবিংশ শতাব্দিতে দাঁড়িয়ে এমন কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ? স্বাভাবিকবশতই প্রশ্ন উঠছে।
দাবি- সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি বেশ ভাইরাল হয়েছে। যেখানে এক কিশোরির মুখের ব্লার ছবি দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে, উত্তরপ্রদেশে ব্রাহ্মণরা নাকি সংশ্লিষ্ট কিশোরীর জিভ কেটে নিয়ে উৎসর্গ করেছেন শিব মন্দিরের দেবতাকে! অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর জিভ কেটে নেওয়ার নেপথ্যে মূল কারণ দেশ থেকে করোনাকে বিতাড়িত করা।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে যায়। করোনা থেকে মুক্তি পেতে সম্প্রতিই এক যুবকের কাটা মুন্ডু দিয়ে পুজো করা হয়েছিল ওড়িশায়। যদিও পুরোহিতের এই দাবিকে মিথ্যে বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন যুবকের প্রতিবেশীরা। ব্যক্তিগত সমস্যার জেরেই নাকি সেই খুন হয়েছে। এবং তা থেকে বাঁচতেই অজুহাত হিসেবে ‘করোনামুক্ত দেশ’-এর দাবি করেছিলেন ওই পুরোহিত, এমনটাই মত তাঁদের। নরবলির পর ‘করোনা মাতা’র পুজোর ছবিতেও ছয়লাপ সোশ্যাল মিডিয়া। এবার তার মাঝেই প্রকাশ্যে আসে দেশকে করোনামুক্ত করতে কিশোরীর কাটা জিভ শিব মন্দিরে উৎসর্গ করার ঘটনা।
একবিংশ শতাব্দিতে দাঁড়িয়ে এমন কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষ? স্বাভাবিকবশতই প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু আদৌ কতটা সত্যি এই বিষয়টি? তার অন্তর্তদন্ত করতে নামে সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম। সত্যতার বিষয়টি সর্বপ্রথম টুইট করে প্রকাশ্যে আনেন আম আদমি পার্টির বিধায়ক সৌরভ ভরদ্বাজ।
তাহলে সত্যি কোনটা? এই কাজ মোটেই উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণরা করেননি। মেয়েটি নিজেই শিবের উপাসক। বিগত চার বছর ধরে শিবপুজো করে চলেছে সে। সেই কিশোরিই স্বেচ্ছায় জিভ কেটে শিব মন্দিরে উৎসর্গ করেছে। এই মেয়েটির বাড়ি উত্তরপ্রদেশের বান্দা জেলার একটি গ্রামে। দেশের করোনা ত্রাস তাঁকে ভাবিয়ে তুলেছিল। তাই নিজের গ্রামকে করোনামুক্ত করতে এমন কাণ্ড ঘটায় মেয়েটি।
[আরও পড়ুন: ফোনের ওপার থেকে কে করোনা সতর্কবার্তা দেন দেশবাসীকে? জানুন সেই মহিলার আসল পরিচয়]
তথ্য যাচাইয়ের পদ্ধতি- যথাযথ কিছু ‘কিওয়ার্ড’ ব্যবহার করে গুগলে সার্চ করা হয়। তার ভিত্তিতেই জানা যায় যে খবরটি প্রকাশ্যে এসেছিল এই বছরের ২৩মে। খবরের শিরোনামে লেখা ছিল, “গ্রামকে করোনামুক্ত করতে নিজের জিভ কেটে শিব মন্দিরে উৎসর্গ করলেন ১৬ বছরের কিশোরী।” সেখানে কোথাও ব্রাহ্মণদের উল্লেখ ছিল না। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে অ্যাডিশনাল এসপি লাল ভারত কুমার পালের মন্তব্যও রয়েছে, “ভাদাভাল গ্রামে এই ১৬ বছরের মেয়েটি নিজেই তার জিভ কেটেছে। কারও নির্দেশে কিংবা কেউ জোর করে এ কাজ করায়নি তাকে দিয়ে। অচৈতন্য অবস্থায় তড়িঘড়ি মেয়েটিকে হাসপাতালে ভরতি করা হয়। এখন সে সুস্থ এবং তাকে বাড়িতেও নিয়ে আসা হয়েছে সম্প্রতি।”
উপরোক্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্তেই উপনীত হওয়া যায় যে, ১৬ বছরের ওই কিশোরী নিজেই ঘটনার জন্য দায়ী। কোনও ব্রাহ্মণ বা অন্য কেউ এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন।
[আরও পড়ুন: ভয়াবহ আকার নিচ্ছে অসমের তেলের কুয়োর আগুন, নেভাতে গিয়ে মৃত দুই]
The post করোনা তাড়াতে কিশোরীর জিভ কেটে মন্দিরে উৎসর্গ ব্রাহ্মণদের! জানুন সত্যিটা appeared first on Sangbad Pratidin.