মণিশংকর চৌধুরী: গুঞ্জন ছিলই। ব্রাজিল (Brazil) থেকে ভারতের হাতে আসবে মাঝারি পাল্লার পণ্য পরিবহণকারী বিমান এমব্রেয়ার। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র অন্তর্গত হ্যালের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রায় ৫০টি বিমান ভারতেই তৈরি করবে সংস্থাটি। এদিকে সূত্রের খবর, আজ, শুক্রবারই প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র চুক্তিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে ডিফেন্স অ্যাকুজিশন কাউন্সিল।
চুক্তি মোতাবেক এমব্রেয়ারের পাশাপাশি আরও সুখোই বিমানও নাকি কেনা হবে। এই বিষয়ে কথা বহুদূর এগিয়ে গিয়েছে বলেই জানা যাচ্ছে। শুক্রবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হয়। সেখানেই ঠিক হয় ‘আত্মনির্ভর ভারতের’ পথে আরও একধাপ এগিয়ে যেতে এই চুক্তি করা হবে। কেবল এমব্রেয়ারই নয়, তৈরি হবে ১২টি সুখোই ৩০এমকেআই বিমানও।
[আরও পড়ুন: সবচেয়ে বেশি ভিউয়ের নজির চন্দ্রযান ৩-এর লাইভ স্ট্রিমের, ইসরোকে শুভেচ্ছা YouTube কর্তার]
কেন রাশিয়ার আন্তনোভের পরিবর্তে ব্রাজিলের এমব্রেয়ারকে বেছে নেওয়া হল? আসলে ইউক্রেন যুদ্ধের পরিস্থিতিতে রুশ যন্ত্রাংশে টান পড়েছে। অন্যদিকে আন্তনোভগুলির কাঠামোও সোভিয়েত জমানার। এদিকে বায়ুসেনার আধুনিকীকরণে অত্যাধুনিক বিমানের চাহিদা ছিলই। কারণ, গালওয়ান পরবর্তী পরিস্থিতিতে পূর্ব লাদাখ ও অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার অঞ্চলে দ্রুততার সঙ্গে রসদ, সেনা ও হাতিয়ার মোতায়েন করাটা কত গুরুত্বপূর্ণ তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ইউক্রেন সংঘাত চিরাচরিত যুদ্ধের ধারণা পালটে দিয়েছে। লজিস্টিক বা সাপ্লাই লাইনের ব্যর্থতার জেরেই মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে বিরাট রুশ বাহিনীকে। আর তা থেকেই শিক্ষা নিয়েছে ভারতীয় সেনা। অন্যদিকে, প্রযুক্তি হস্তান্তরে রাজি হয়েছে ব্রাজিলের বিমান নির্মাতা সংস্থাটি। ফলে অদূর ভবিষ্যতেই দেশে বিমানের অধিকাংশ যন্ত্রাংশ তৈরি করা সম্ভব। মনে রাখা দরকার, আমেরিকা ও পশ্চিমের দেশগুলো যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে অস্ত্র রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে দেয়। ফলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতাকেই ‘পাখির চোখ’ করেই এগোতে চাইছে মোদি সরকার।