সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রতারণার দায়ে গ্রেপ্তার হওয়া ফেরার হিরে ব্যবসায়ী নীরব মোদি এক প্রত্যক্ষদর্শীকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন। আরও এক সাক্ষীকে ২০ লক্ষ টাকা ঘুষ দিয়ে প্রভাবিত করার চেষ্টাও করেছিলেন। যাতে গ্রেপ্তারি এড়াতে পারেন। পাশাপাশি, তাঁর অন্য দেশে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই। তাই ভুয়ো ‘লেটার অফ ক্রেডিট’ জমা দিয়ে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংককে (পিএনবি) ১৩ হাজার কোটি টাকা প্রতারণার দায়ে ধৃত নীরবের জামিনের আবেদন দ্বিতীয়বার খারিজ করে দিল লন্ডনের আদালত। বিচারক এই ঘটনাকে ‘সাধারণ প্রতারণা’ নয় বলেই মন্তব্য করেছেন। আরও চার সপ্তাহ এই বিতর্কিত হিরে ব্যবসায়ীকে কারাগারের অন্তরালেই কাটাতে হবে। পরবর্তী শুনানি ২৬ এপ্রিল।
[আরও পড়ুন: বৃথা ভারতের ডসিয়ের, যথারীতি জঙ্গি শিবিরের অস্তিত্ব অস্বীকার পাকিস্তানের]
নীরব মোদির বিরুদ্ধে মামলায় ব্রিটিশ প্রশাসনকে সাহায্য করতে শুক্রবারই লন্ডন পৌঁছায় সিবিআই-ইডির তদন্তকারী দল। তাদের পেশ করা নতুন সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতেই শুক্রবার নীরবের জামিন পাওয়া আটকে গেল। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের তরফে এদিন ব্রিটিশ সরকারি আইনজীবী টোবি ক্যাডম্যান একাধিক নথি জমা দিয়ে তাঁর জামিনের আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন। তাঁর দাবি, তদন্তে ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে নীরব একেবারেই সাহায্য করেননি, তাঁর পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সাক্ষীদের প্রভাবিত করা এবং নথি নষ্ট করার চেষ্টা আগেও করেছেন, ভবিষ্যতেও করতে পারেন। এ প্রসঙ্গে আশিস লাদ নামে এক ব্যক্তিকে ফোন করে নীরবের খুনের হুমকি দেওয়া এবং আরও এক সাক্ষীকে টাকা দিয়ে গ্রেপ্তারি এড়ানোর চেষ্টার কথা উল্লেখ করেন তিনি। নীরবের নির্দেশে পিএনবি কর্তাদের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথোপকথনের রেকর্ডও নষ্ট করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তাছাড়া ২০১৭-র শেষে তিনি ভানাতুর নাগরিকত্ব চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তাই জামিন পেলে তাঁর পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান ক্যাডম্যান।
যদিও নীরবের আইনজীবী ক্লেয়ার মন্টগোমারি দাবি করেন, গত বছরের জানুয়ারি থেকে তিনি ব্রিটেনে রয়েছেন। আগস্ট মাসেই জানতে পারেন, ভারত তাঁর প্রত্যর্পণের আবেদন করেছেন। তা সত্ত্বেও পালিয়ে যাননি। লন্ডনে প্রকাশ্য জীবনযাপন করেছেন। ক্যাডম্যানের সওয়ালের ভিত্তিতে এদিন ওয়েস্টমিনস্টার আদালতের মুখ্য বিচারক এম্মা আর্বাথনট নীরবের জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন। ২৬ এপ্রিল পরবর্তী শুনানির দিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁকে হাজিরা দিতে হবে। উল্লেখ্য, এই বিচারকই গত ডিসেম্বরে ঋণখেলাপি লিকার ব্যারন বিজয় মালিয়াকে ভারতে প্রত্যর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। জামিন খারিজ হওয়ায় আপাতত নীরবকে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের ওয়ান্ডসওয়ার্থ জেলেই থাকতে হবে। ১৯ মার্চ মধ্য লন্ডনের একটি ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন নীরব মোদি। ভারত তাঁর পাসপোর্ট আগেই বাতিল করে দিয়েছিল। কিন্তু গ্রেপ্তারির পর দেখা যায় নীরবের হেফাজতে একাধিক পাসপোর্ট রয়েছে। একটি যেমন মেট্রোপলিটন পুলিশের হেফাজতে। আর একটি মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে জমা আছে। তৃতীয় একটি রয়েছে দেশের ড্রাইভিং ও ভেহিক্যালস লাইসেন্স দপ্তরে। তাছাড়া নীরবের কাছে একাধিক রেসিডেন্সি কার্ড রয়েছে। যার মধ্যে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে থাকার অনুমতি রয়েছে।
[আরও পড়ুন: জঙ্গি হামলায় সরব, হিন্দুদের ধর্মান্তকরণে চুপ কেন? মালালার ভূমিকায় প্রশ্ন নেটদুনিয়ায়]
The post ব্রিটিশ আদালতে খারিজ নীরব মোদির জামিনের আবেদন appeared first on Sangbad Pratidin.