সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুতেই থামছে না ইউক্রেন (Ukraine) ও রাশিয়ার যুদ্ধ। এই সংঘাতের ফলে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তৈরি হয়েছে অত্যন্ত জটিল ভূ-কৌশলগত সমীকরণ। একদিকে, কিয়েভের পাশে দাঁড়িয়েছে আমেরিকা ও ইউরোপ। অন্যদিকে, ভারত ও চিনের মতো দেশগুলি যে মস্কোর দিকেই ঝুঁকে রয়েছে তা স্পষ্ট। এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফোনে কথা বললেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
[আরও পড়ুন: রুশ বিরোধী নেতা নাভালনির ৯ বছরের জেল, যুদ্ধের আবহে বিদ্রোহ দমন পুতিনের!]
মঙ্গলবার ইউক্রেনে চলা ভয়াবহ যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেন মোদি ও জনসন। দুই রাষ্ট্রপ্রধানের আলোচনায় বারবার কূটনৈতিক সমাধানের কথা উঠে আসে। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীকে মোদি জানান, ভারত বরাবরই আলোচনা ও কূটনৈতিক স্তরে শান্তি ফেরানোর পক্ষে আবেদন করেছে। একইসঙ্গে নমো আন্তর্জাতিক আইনকে মান্যতা দেওয়া ও সমস্ত দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার পক্ষেই সওয়াল করেন। এদিকে ব্রিটেনের তরফে এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ইউক্রেনের ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কথাবার্তা হয়েছে। বরিস জনসন জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট যে পদক্ষেপ করেছেন তা এককথায় বিরক্তিকর ও ধ্বংসাত্মতক গোটা পৃথিবীর কাছে। উভয় প্রধানমন্ত্রী একটা বিষয়ে একমত যে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা দরকার।
বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়াকে একহাত নেওয়ার জন্য ভারতের উপর লাগাতার চাপ বাড়াচ্ছে আমেরিকা ও ইউরোপের দেশগুলি। পর্দার আড়ালে মস্কোকে একঘরে করতে নয়াদিল্লির সঙ্গে আলোচনা চালাচ্ছে পশ্চিমের দেশগুলি। কারণ, মার্কিন শিবিরের চাপিয়ে দেওয়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞার ধার ভোঁতা করতে ভারত ও চিনের থেকে অনেকটাই মদত পাচ্ছে রাশিয়া। ফলে বিশ্বের অন্যতম বড় দুই অর্থনীতিকে সঙ্গে না পেলে পুতিনকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে একঘরে করা সম্ভব নয়। বলে রাখা ভাল, চিনকে জব্দ করতে রাশিয়ার উপর একগুচ্ছ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান-সহ একাধিক দেশ। রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করাও বন্ধ করে দিয়েছে ওয়াশিংটন। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেওয়া হয়।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কয়েকদিন আগেই চিনকে হুঁশিয়ারি দেন আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়াকে সাহায্য করলে ফল ভুগতে হবে বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন তিনি। তারপরই গতকাল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, রাশিয়া নিয়ে ভারতের অবস্থান নড়বড়ে। আর বাইডেনের পরই জনসনের মোদিকে ফোন যথেষ্ট ইঙ্গিতবহ।