সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কোহিনূর, এখন যা কিনা ইংরেজদের সম্পত্তি, সেই মহামূল্যবান রত্নটি নিয়ে গল্পের শেষ নেই। কোথা থেকে এর উৎপত্তি, এর আসল মালিক কে? এসব নিয়ে বিস্তর বিতর্ক আছে। কেউ দাবি করেন, ভারতীয় রাজারা স্বেচ্ছায় কোহিনূর ব্রিটিশ মহারানির হাতে তুলে দিয়েছিলেন, আবার অনেকে দাবি করেন কোহিনূর জোর করে ছিনিয়ে নিয়েছিল ব্রিটিশরা। এমন হাজারো জনশ্রুতির মধ্য আসল তথ্য দিল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। আর এই সরকারি সংস্থার দেওয়া তথ্যে আরও বাড়ল বিতর্ক।
যতদূর জানা যায়, কোহিনূরের বর্তমান ওজন ১০৫.৬ ক্যারেট। একসময় এটার ওজন ছিল ১৮৬ ক্যারেট, যা কিনা বিশ্বের বৃহত্তম হীরের টুকরো। এর কাটাইয়ের ধরন দেখলেই বোঝা যায় এটি মোঘল আমলে তৈরি। অবিভক্ত ভারতবর্ষে বহুবার হাত বদলের পর ১৮৪৯ সালে মহারাজা দিলীপ সিংয়ের কাছ থেকে এই হীরাটি চলে যায় ব্রিটেনের মহারানি ভিক্টোরিয়ার কাছে। তারপর থেকেই এটি ইংরেজদের সংগ্রহশালার শোভা বাড়াচ্ছে। কিন্তু প্রশ্ন হল কীভাবে কোহিনূর গেল ইংরেজদের হাতে। তা জানতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একটি আরটিআই করেন রোহিত শোভ্রাওয়াল। প্রশ্নটি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার কাছে পাঠায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর। এএসআই জানিয়েছে কোহিনূর স্বেচ্ছায় ব্রিটিশ সরকারের হাতে তুলে দেয়নি ভারত। বরং তা একপ্রকার ছলনা করে নেওয়া হয়েছিল।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী ওই হীরেটি মহারাজা দিলীপ সিংয়ের কাছে থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিল ইংরেজরা। ১৮৪৯ সালে ইঙ্গ-শিখ যুদ্ধের পর মহারাজা দিলীপ সিং এবং লর্ড ডালহৌসির মধ্যে লাহোর চুক্তি হয়। সেই চুক্তিতেই কোহিনূর ব্রিটেনকে দিয়ে দেওয়ার শর্ত দেওয়া হয়, যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ বাবদ কোহিনূর দাবি করে ব্রিটিশরা। আর তাতে সম্মত হন মহারাজ দিলীপ সিং। কিন্তু সেসময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৯ বছর, তাই তিনি ওই হীরেটির গুরুত্ব বুঝতে পারেননি বলে জানিয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। তাঁকে ফাঁকি দিয়েই হীরের কথা চুক্তিতে লেখা হয়েছিল বলে দাবি করেছেন, মহারাজা দিলীপ সিং মেমোরিয়াল ট্রাস্টের চেয়ারম্যানও। তাঁর দাবি, কোহিনূর হাতিয়ে নিতে ছলনার আশ্রয় নিয়েছে ব্রিটেন, তাই ওই হীরেতে ভারতেরই প্রথম অধিকার। এএসআই আবার জানিয়েছে, ভারত এখনও ইংল্যান্ডের কাছ থেকে হীরেটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, একই চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তানও।
The post নাবালক রাজাকে ফাঁকি দিয়ে কোহিনূর ‘ছিনতাই’ করেছিল ইংরেজরা! appeared first on Sangbad Pratidin.