দুলাল দে: ভিয়েরা প্রায়দা থেকে হাইওয়ে ধরে লিসবন বিমানবন্দরের দিকে যেতে বাঁ-দিকে ‘এফসি পোর্তো’র স্টেডিয়াম। রাত হলেই স্টেডিয়ামের আলোয় আলোকজ্জ্বল হয়ে ওঠে বিমানবন্দরমুখী হাইওয়ের রাস্তা। মঙ্গলবার নর্থ ম্যাসিডোনিয়া ম্যাচের পর নিশ্চিতভাবেই স্টেডিয়ামের আলোর বিচ্ছুরণ আরও কয়েক ওয়াট বেড়ে গিয়েছে। আর বাড়বেই না কেন, এতো শুধু পর্তুগালের কাতার বিশ্বকাপ খেলার এন্ট্রি পাস পাওয়া নয়, ঘরের ছেলে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোরও (Cristiano Ronaldo) পঞ্চমবারের জন্য বিশ্বকাপে পা রাখার মুহূর্ত প্রত্যক্ষ করা।
এখনও পর্যন্ত মেক্সিকোর কার্ভাহাল, রাফায়েল মার্কুয়েজ, জার্মানির লোথার ম্যাথাউজ এবং ইতালির বুঁফো পাঁচ পাঁচটি বিশ্বকাপ খেলার গৌরব অর্জন করেছেন। আঘাতজনিত কোনও সমস্যা না হলে সেই তালিকায় নতুন দু’টো নাম সংযোজিত হতে চলেছে, লিওনেল মেসি এবং ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। হিসাব অনুযায়ী এই মুহূর্তে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর বয়স ৩৭ বছর দু’মাস। ফলে এটাই সিআর সেভেনের শেষ বিশ্বকাপ, তা বলাইবাহুল্য। আর তা থেকেই প্লে-অফ ফাইনালে নর্থ ম্যাসিডোনিয়া ম্যাচের আগে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বিশ্বজুড়ে রোনাল্ডো ফ্যানরা।
[আরও পড়ুন: কলকাতার ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সুখবর, আইপিএলের প্লে-অফের ম্যাচ পাচ্ছে ইডেন!]
সিআর সেভেন ছাড়া বিশ্বকাপ (World Cup 2022)! খোদ রোনাল্ডোই ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে পারেননি। তাই ম্যাচ শুরু আগেই হুঙ্কার ছেড়েছিলেন। আসলে ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালিকে ১-০ গোলে হারিয়ে দেওয়ার পরই নর্থ ম্যাসিডোনিয়াকে ঘিরে টেনশনের পারদটা বেড়ে ওঠে। তা এই মাত্রায় গিয়ে পৌঁছয় যে, ভারতীয় সময় মঙ্গলবার মাঝরাতে পোর্তোর স্টেডিয়ামে ম্যাচ চলাকালীন এক সেকেন্ডের জন্যও বেঞ্চে না বসে সারাক্ষণ ডাগআউটে দাঁড়িয়ে রইলেন কোচ ফার্নান্ডো স্যান্টোস।
করোনা (Coronavirus) থেকে মুক্ত হয়ে নর্থ ম্যাসিডোনিয়ার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই ডিফেন্সে ছিলেন অভিজ্ঞ পেপে। সঙ্গে সাসপেনশন উঠে দলে ক্যান্সেলোও। লেফটব্যাকে গুয়েরিয়োর জায়গায় মেন্ডেস। ডিফেন্স পাকাপোক্ত করে ফেলার পর দেখার ছিল পর্তুগালকে কীভাবে কাতার বিশ্বকাপের রাস্তা খুঁজে দেন রোনাল্ডো। ম্যাচের ১৪ মিনিটের মাথায় দারুণ সুযোগ তৈরি করেও অবশ্য ব্যর্থ হন। তবে প্রথম ও দ্বিতীয়ার্ধে একটি করে গোল করে দলকে কাঙ্ক্ষিত জয় এনে দেন ব্রুনো ফার্নান্ডেস। ৪-২-৩-১ ফর্মেশনে শুরু করা নর্থ ম্যাসিডোনিয়া কিন্তু একটা সময় পর্যন্ত বেশ চেপে ধরেছিল পর্তুগালকে। তবে ফুটবল বিশেষজ্ঞরা বলেন, ছোট দলগুলি ততক্ষণই ভাল, যতক্ষণ না গোল খায়। একটা গোল হয়ে গেলেই সব শেষ।