সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কা ছিলই। শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্যি হতে চলেছে। তালিবানের (Taliban) দখলে চলে যাওয়া আফগানিস্তানে দ্রুত ফুরিয়ে যেতে বসেছে খাদ্য ও অন্যান্য জীবনদায়ী রসদ। বিধ্বস্ত সেদেশের অর্থনীতি। এহেন পরিস্থিতিতে যুদ্ধজর্জর দেশটিতে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে ১২০ কোটি ইউরো আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
[আরও পড়ুন: আমেরিকায় বাড়ির উপরে আছড়ে পড়ল বিমান! ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত অন্তত ২]
মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় ইউরোপীয় ইউনিয়ণের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রথমবার মুখোমুখি বৈঠকে বসে তালিবান। দোহায় জি-২০ সামিটে ব্রাসেলসের এই ঘোষণা আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয় এড়ানোর জন্য বলে দাবি করেছে ইইউ কমিশণের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভনডের লিয়েন। তাঁর বক্তব্য, চরম অর্থ-সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আফগানিস্তান। তাই সে দেশের মানুষের কথা ভেবে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। তবে আর্থিক মদতের টাকা সরাসরি তালিবান সরকারের হতে তুলে দেওয়া হবে না। কারণ এখনও জেহাদি সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি ব্রাসেলস। তাই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলির মাধ্যমে আফগান জনতার কাছে এই টাকা পৌঁছে দেওয়া হবে। উরসুলা জানিয়েছেন, এই ১২০ কোটি ইউরোর মধ্যে ২৫ কোটি (প্রায় ২,১৭৭ কোটি টাকা) দেওয়া হবে আফগানিস্তানের কয়েকটি প্রতিবেশী দেশকে, যারা ঘরছাড়া আফগানদের আশ্রয় দিয়েছে।
গত সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসংঘের মানবতা বিষয়ক সমন্বয় দপ্তর জানিয়েছিল, দ্রুত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে চলেছে আফগানিস্তান। রাষ্ট্রসংঘের মুখপাত্র জেন্স লার্ক জেনেভায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, সেদেশের লক্ষ লক্ষ আফগান নাগরিক বড় সমস্যার মুখে। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ভেঙে পড়ার মুখে। আন্তর্জাতিক আঙিনার কাছে তাঁর আবেদন, এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে ৬০ কোটি ডলার অর্থসাহায্য় করার জন্য। রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস সদস্য দেশগুলির কাছে অনুদানের আবেদন জানিয়ে বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’ (ডব্লিউএফপি) কর্মসূচি রূপায়ণে ওই অর্থ ব্যবহৃত হবে।
গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখল করে তালিবান। নতুন করে শুরু হয় অন্ধকার যুগের। তারপর থেকেই আশঙ্কিত গোটা বিশ্ব। তালিবানি তাণ্ডবের (Taliban Terror) বীভৎস চেহারা সারা বিশ্বকে দেখতে হয়েছে। প্রাণ বাঁচাতে রাস্তায় উন্মত্তের মতো ছুটেছে সাধারণ মানুষ। বিশিষ্টরাও বাদ যাননি। তালিবানরা দেশ দখল করে নেওয়া পর প্রাণ বাঁচাতে দেশ ছাড়তে চেয়েছিলেন জাতীয় দলের এক ফুটবলার। কিন্তু প্লেন থেকে পড়ে গিয়ে তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় নেট নাগরিকরা শিহরিত। এখনও ‘কাবুলিওয়ালার দেশে’র রুক্ষ মাটিতে রক্তের দাগ। মঙ্গলবারও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নামা আফগান মহিলাদের উপরে গুলি চালিয়েছে জেহাদিরা।