সৌরভ মাজি, বর্ধমান: গণপিটুনিতে মারা গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। ২০১১ সালে বর্ধমানের ওই খুনের ঘটনায় নয়জনকে যাবজ্জীবন সাজা দিল বর্ধমান আদালত। একসঙ্গে নয়জনকে এই সাজা শোনানোর ঘটনা যথেষ্ঠ তাৎপর্যপূর্ণ। এমনই মনে করা হচ্ছে।
২০১১ সালের ১০ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। মেমারি থানার করণদা গ্রামে খুন হয়েছিলেন ভূতনাথ মালিক নামে এক ব্যক্তি। গ্রামেরই কিছু বাসিন্দা তাঁকে বেধড়ক মারধর করেছিল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার কিছু দিন আগে ওই গ্রামে নবান্ন উৎসব হয়েছিল। সেখানে ওই ব্যক্তি কিছু কটুক্তি করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই ঘটনার জন্য গ্রামে শালিসি সভা বসানোর কথা বলা হয়েছিল। ওই ব্যক্তিকে ডাকা হলেও তিনি যাননি।
সেই ঘটনায় আরও ক্ষোভ বেড়েছিল। ঘটনার দিন বিকেলে ভুতনাথ মালিককে ফুলপুকুর পুকুরের পারে দেখতে পেয়ে ব্যাপক মারধর করা হয়। তারপর তাঁকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামেরই একটি ক্লাবঘরে। সেখানে শালিসি সভা করার জন্য লোকজন জড়ো হয়েছিলেন। তবে সেদিন আর শালিসি সভা হয়নি। তার বদলে সেখানে আবার তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই মারধরেই প্রাণ হারান ওই ব্যক্তি। রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ পুলিশ সেখানে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
মৃতের ভাই গণেশ মালিক ওই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ তদন্তে নেমে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে একাধিক গ্রামবাসীকে গ্রেপ্তার করে। অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের পঞ্চম কোর্টে বিচারক দেবশ্রী হালদারের এজলাসে এই মামলার শুনানি চলছিল। পুলিশ ২৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়। এক দশকের বেশি সময় ধরে এই মামলার বিচার চলে। আজ সোমবার বিচারক পাঁচ মহিলা-সহ নয় জনকে যাবজ্জীবন সাজা শোনান। বাকিদের বেকসুর খালাস করা হয়েছে। সাজাপ্রাপ্তরা হল মোহন পণ্ডিত, অজয় পণ্ডিত, রাজু পণ্ডিত, মিলন বাগ, লক্ষ্মী ঘরুই, শান্তি ঘরুই, কবিতা পণ্ডিত, অলোকা বাগ ও ছবি বাগ।