অভিরূপ দাস: খেতে খেতে টিভি দেখার মাশুল। মনোযোগ টিভির দিকে। কোন ফাঁকে ব্লাউজের সেফিটিপিন খুলে ভাতে পড়েছে তা খেয়ালও করেননি। গলায় সেফটপিন আটকে দমবন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছিল রামপুরহাটের বাসিন্দা শমিতা হালদারের। এমন ক্ষেত্রে অধিকাংশ রোগীকেই কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়। তবে শহর কলকাতায় আনার প্রয়োজন হয়নি শমিতাদেবীকে। জেলার মেডিক্যাল কলেজেই চিকিৎসকরা খাদ্যনালি থেকে বের করলেন সেফটিপিনটি। গত ২৬ এপ্রিলের ঘটনা। দুপুরে বাড়িতে বসে আহার সারছিলেন ৬০ বছরের শমিতা হালদার। খেতে খেতে গলায় কিছু আটকে যায়। মাংসভাত খাচ্ছিলেন। ভেবেছিলেন হয়তো মাংসের হাড়। শুকনো ভাত খেয়ে নেন। দুটো কলা। তবু মিটছিল না সমস্যা। হাড় গলাতে শেষমেশ হোমিওপ্যাথিক ওষুধ কিনে আনেন। তাতেও মেলেনি উপশম। এক হাসপাতাল ঘুরে শেষমেশ আসেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে রোগীর এক্স রে করা হয়। দেখা যায় সেফটিপিন আটকে আছে ক্রিকো ফ্যারিংস এলাকায়। অর্থাৎ খাদ্যনালির মাঝামাঝি জায়গায়। চিকিৎসকরা বলছেন, রোগীর ভাগ্য ওই সেফটিপিন শ্বাসনালি পর্যন্ত যায়নি। খাদ্যনালির মাঝামাঝিতে এসেই আটকে ছিল। তবে এ ঘটনার নেপথ্যে খেতে খেতে টিভি দেখার বদ অভ্যাসকেই দায়ী করছেন চিকিৎসকরা।
[আরও পড়ুন: প্রেমিকার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে বলতেই চরম সিদ্ধান্ত! ঘর থেকে উদ্ধার ছাত্রের দেহ]
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ডা. রিয়া সিনহা জানিয়েছেন, খেতে খেতে টিভি দেখার এই এক সমস্যা। সজাগ হয়ে খেলে এমন ঘটনা এড়িয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু অন্যদিকে মন থাকলেই বিপত্তি। চিকিৎসকরা বলছেন, শমিতাদেবীর ব্লাউজ থেকেই সেফটিপিন খুলে পড়েছিল ভাতের থালায়। কিন্তু টিভি দেখতে ব্যস্ত থাকায় তা খেয়াল করেননি। ভেবেছিলেন মাংসের হাড়। প্রায় ১ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে বের করা হয় সেফিটিপিনটি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রিজিড ইসোফেগাসস্কোপি করে বের করা হয় সেফটিপিনটি। ডা. প্রদীপ্ত ঘোষ এবং ডা. ঋতম রায়ের তত্ত্বাবধানে অস্ত্রোপচার টিমে ছিলেন ডা. রিয়া সিনহা। অ্যানাস্থেসিস্ট হিসাবে ছিলেন ডা. সৌমেন মণ্ডল। অস্ত্রোপচারে সাহায্য করেছেন ডা. বাপ্পাদিত্য গিরি, ডা. হর্ষিতা ডোকানিয়া। রিজিড ইসোফেগাসস্কোপি প্রক্রিয়ায় গলায় একটি সরু টিউব ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। যার সামনে থাকে একটি লেন্স। বাইরে স্ক্রিনে দেখা যায় গলার ভিতরের অংশটি।