সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচির নাম করে বিজেপির দলীয় তহবিলে মোটা টাকা অনুদান চেয়েছিলেন বিজেপির মণ্ডল সভাপতি। তা দিতে অস্বীকার করায় ব্যবসায়ীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠল ওই মণ্ডল সভাপতির বিরুদ্ধে। নদিয়ার শান্তিপুর ব্লকের বেলঘরিয়া ১ নম্বর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বেলের মাঠ এলাকার ঘটনার প্রতিবাদে সরব তৃণমূল। X হ্যান্ডলে খোঁচা ঘাসফুল শিবিরের।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই শান্তিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন প্রহৃত ব্যবসায়ী সুজন জোয়ারদার।
ওই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, বুধবার বাঁশতলাপাড়ায় বিজেপির মণ্ডল সভাপতি প্রদীপ সরকারের বাড়ির সামনে দিয়ে মোটরবাইক চালিয়ে যাওয়ার সময় সে, স্থানীয় বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য-সহ বেশ কয়েকজন সুজনবাবুর পথ আটকে শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচির নাম করে মোটা টাকা দাবি করে। কিন্তু, সুজনবাবু তা দিতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে ইট, বাঁশ, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই অবস্থায় তিনি স্থানীয় ফুলিয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। পরে, মাথার স্ক্যান করিয়ে বুধবার সন্ধ্যাতেই শান্তিপুর থানায় প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
[আরও পড়ুন: প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দুষ্কৃতীদের ধাওয়া, রানাঘাটের সেই পুলিশকর্মীকে বীরের সম্মান দেবে রাজ্য]
প্রহৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রী মৌসুমী জোয়ারদার বলেন, ‘‘শুধু আমার স্বামী নয়, এই এলাকায় অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা তুলেছে বিজেপির ওই নেতা। বিষয়টি নিয়ে আমরা যথেষ্ট আতঙ্কে রয়েছি। পুলিশ অবিলম্বে দোষীকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দিক।’’ অপর এক ব্যবসায়ী অরিজিৎ পাল বলেন, ‘‘আমার কাছেও টাকা চাওয়া হয়েছিল। তবে ভয়ে থানায় জানাতে পারিনি।’’ যদিও, সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত বিজেপির মণ্ডল সভাপতি বলেন, ‘‘আমি রাজনীতি করি, আমার ভাই ব্যবসা করে। সে সুজনের কাছে দীর্ঘদিন ধরে টাকা পাবে। আমি দেখি রাস্তায় দু’জনের মধ্যে বচসা হচ্ছে। ভাইকে আর সুজনকে ঠেকাতে গিয়েছিলাম আমি। পরে শুনলাম থানায় মিথ্যে অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল কাউকে মারা হয়নি। দু’জনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়েছিল।’’
অন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও টাকা তোলার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সুজন নানা ধরনের বেআইনি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। ফলে, তার সঙ্গে অসামাজিক মানুষজনের নিত্য যোগাযোগ। তাই মিথ্যা সাক্ষী দিয়েছে।’’ এবিষয়ে বিজেপি এসসি মোর্চার নদিয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক পিন্টু কর্মকার জানান,‘‘ব্যবসায়িক বিষয়ে ব্যক্তিগত সমস্যা। রাজনৈতিকভাবে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।’’ পালটা বিজেপিকে কটাক্ষ করেন নদিয়া জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তপন সরকার জানান, ‘‘ছোট হোক বা বড় যে কোনও প্রোগ্রামে ওরা যে টাকা খরচ হয় তার দশগুণ টাকা তোলে। ব্যবসায়ীকে সাধুবাদ জানাই সাহস করে অভিযোগ জানানোর জন্য। আগামিদিনে সমস্ত ব্যবসায়ীরা একত্রিত হয়ে রুখে দাঁড়াবেন বলেই আমার বিশ্বাস।’’